কেমন আছে গ্রিক দ্বীপের শরণার্থী শিশুরা?

প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০১৬, ০৬:০৫ এএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গ্রিক দ্বীপ কিয়স৷ সেখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি শরণার্থী শিবির৷ শরণার্থী শিশুদের জন্য একটি প্রকল্প চালু হয়েছে সেখানে৷ এ প্রকল্পের আওতায় শিশুদের নানা ধরণের শিক্ষা দেয়া হচ্ছে৷

একটি শরণার্থী শিবিরের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে ছোট্ট রোজা৷ পিঠে ঝোলানো ব্যাগ৷ আনন্দে লাফাচ্ছে সে৷ বলছে, ‘‘ভালো স্কুল, ভালো স্কুল''৷ রোজা আসলে সিরিয়া থেকে আসা শরণার্থী৷ তার মতো আরো কিছু শিশু শরণার্থী এখন স্কুলে যায়৷ ২৭০টি শিশু রয়েছে এই দ্বীপে, যারা ইংরেজি শিখছে, পাশাপাশি শিখছে অংক, শিল্পকলা এবং অন্যান্য শিক্ষা৷

একটি সুইস বেসরকারি সংস্থা ‘বি অ্যাওয়ার অ্যান্ড শেয়ার' বিএএএস বা ‘বাস' চলতি বছরের মে মাস থেকে শরণার্থী শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে৷ পুরোনো একটি রেঁস্তোরাকে বদলে স্কুল বানানো হয়েছে৷ ২০ টি শক্তিশালী দল এই শিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে৷ ৬ থেকে ১২ বছর বয়সি শিশুদের পড়ালেখা শেখানো হচ্ছে৷ আর কিশোর কিশোরীদের জন্য আছে হাতে কলমে ব্যবহারিক শিক্ষা পদ্ধতি৷ রান্না থেকে বাজার করা পর্যন্ত সবকিছু শেখানো হয় এই কার্যক্রমে৷ এছাড়া আছে পরিচ্ছন্নতা শিক্ষা৷ ব্রিটিশ স্বেচ্ছ্বাসেবী নিকোলাস মিলেত জানালেন, ‘‘আমাদের কার্যক্রম অন্য আর দশটা সাধারণ স্কুলের মতো নয়৷ আমাদের পাঠ্যসূচি আছে, তবে আমরা যেসব শিক্ষা দিই, তাতে এই শিশুরা নিজেদের দেশেই আছে এমনটা অনুভব করে৷ ''

‘বাস' এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক জার্মান তরুণ জ্যাকব রোহদে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানালেন, ‘‘এটা ঠিক যে এই শিশুদের গ্রিসের সাধারণ স্কুলে পড়ালেখা করাটাও জরুরি, কেননা, এতে গ্রিক শিশুদের সঙ্গে মিশে তাদের এখানকার সমাজ সংস্কৃতি সম্পর্কে একটা ধারণা হবে৷''

২৮ বছর বয়সি জেনেবা অন্য একটি শরণার্থী শিবিরে থাকেন, এসেছেন মালি থেকে৷ তিনি এএফপিকে জানালেন, তিনি চান তার শিশু সেরাটা যেন পায়, কেননা, মেয়েটির জন্যই তার এখানে আসা৷ বড় মেয়েটি যৌনাঙ্গচ্ছেদের পর সংক্রমণে মারা যাওয়ায় এই মেয়েটিকে ঘিরেই তার যত স্বপ্ন৷ গ্রিসে বর্তমানে ৬০ হাজার শরণার্থী রয়েছে৷ এদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ২ হাজারের বয়স ৮ বছরের নীচে৷

অন্যদিকে, গ্রিসের শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহ থেকে ‘আফটার আওয়ার' ক্লাস শুরু করেছে, কেবল শরণার্থীদের জন্য৷ অর্থাৎ সাধারণ স্কুলগুলোতে ক্লাস শেষ হওয়ার পর এই শরণার্থীরা পড়ালেখা করবে৷ দেশের এমন ২০টি স্কুলে এখন পড়ালেখা করছে ১৫০০ শরণার্থী শিশু৷

‘শরণার্থী সাপোর্ট নেটওয়ার্ক'-এর সদস্য কাটসিভেলি জানালেন, শরণার্থী শিশুদের বাসায় বসে কিছু করার থাকে না৷ এটা তাদের জন্য খুবই খারাপ, কারণ এখনই তাদের মানসিক বৃদ্ধির সময়৷ আর সামনেই শীত আসছে, তখন তারা খেলাধুলাও করতে পারবে না৷ তাই তাদের স্কুলে যাওয়াটা জরুরি৷ ‘সাপোর্ট নেটওয়ার্ক' এবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল৷

অক্টোবরের শেষ নাগাদ অন্তত ১০ হাজার শরণার্থী শিশুকে গ্রিসের বিভিন্ন স্কুলে ভর্তি করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়৷ তবে এরই মধ্যে বিভিন্ন স্কুলে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছেন অভিভাবকরা৷ডয়েচে ভেলে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: