শেরপুরে বন্যহাতির আবাসস্থল সংরক্ষনের দাবীতে মানববন্ধন 

প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০১৬, ১০:০৮ পিএম

শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী-শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বনাঞ্চলে বন্যহাতির আবাসস্থল সংরক্ষনের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। ‘জনউদ্যোগ’ নামের একটি নাগরিক সংগঠনের উদ্যোগে শেরপুর কালেক্টরেট চত্বরে ‘হাতি বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ শ্লোগানে ২৫ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।এ মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার শতাধিক মানুষ ছাড়াও সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডিও), উদীচী, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি), হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস ফোরাম, শেরপুর ডিবেটিং ক্লাব, জেলা মহিলা পরিষদ সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধন চলাকালে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা শামীমা, প্রেসক্লাব সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, অধ্যাপক শিব শংকর কারুয়া শিবু, মহিলা পরিষদ নেত্রী নাসরিন বেগম ফাতেমা, আঞ্জুমান আরা যুথী, সাংবাদিক সঞ্জিব চন্দ বিল্টু, জেলা আ’লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা কহিনুর বেগম বিদ্যুৎ, আঞ্জুমান আলম লিপি, সদর উপজেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি সোলায়মান আহম্মেদ, আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুজ্জামান লেবু, জনউদ্যোগ আহ্বায়ক শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, মানবাধিকার কর্মী শামীম হোসেন, কার্টুনিষ্ট সাইফুল ইসলাম শাহীন, উদীচী সভাপতি তপন সারোয়ার, ডিবেটিং ক্লাবের শুভংকর সাহা প্রমুখ। মানববন্ধন থেকে বক্তারা বলেন, শেরপুর সীমান্তে সাম্প্রতিককালে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। বনভুমি দখল করে পাহাড়ে মানববসতি স্থাপন, প্রাকৃিতক বন ধ্বংস হওয়ায় বনে হাতির খাবার ও বিচরনস্থল নষ্ট হয়েছে। এতে বন্যহাতির দল প্রায়শ:ই পাহাড় থেকে লোকালয়ে নেমে আসছে। এদিকে, হাতি তাড়াতে সাধারন মানুষও আগ্রাসী আচরন করছে। এতে বন্যহাতির আক্রমণে মানুষের জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি যেমন হচ্ছে তেমনি মানুষের পাতা বিদ্যুতের ফাঁদ এবং নানা কায়দায় বন্যহাতিও মারা পড়ছে। এজন্য মানুষের জান-মাল এবং বন্যহাতি রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট দাবী জানানো হয়।

মানববন্ধন শেষে জনউদ্যোগ শেরপুর জেলা কমিটির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবরে পাহাড়ি জনপদে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসন, বন্যহাতির আবাসস্থল সংরক্ষনের দাবীতে ৪ দফা দাবী সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এতে লোকালয়ে মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বনভুমিতে অবৈধ দখলদারদের অবিলম্বে উচ্ছেদ ও হাতি চলাচলের স্থানসমুহে বনাঞ্চলে বসবাসকারীদের বনের বাইরে অন্যত্র পূনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানানো হয়। একইসাথে শেরপুরের বনাঞ্চলে বন্যহাতির জন্য অভয়াশ্রম তৈরী, সংরক্ষিত বনভুমিতে প্রাকৃতিক বন বেড়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি এবং বন্যহাতি সহ বন্যপ্রাণীর প্রতি সদয় আচরন করতে এলাকার মানুষের মধ্যে জনসচেতনা বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানানো হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জিয়াউল ইসলাম স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, গত দেড়মাসে বন্যহাতির আক্রমণে শেরপুরের সীমান্তবর্তী জনপদে ১১ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং ৬টি বন্যহাতি মারা পড়েছে। যেসব হাতি মারা পড়েছে তাদের বেশীর ভাগই হয় বিদ্যুতের পাতা ফাঁদে, গুলিবিদ্ধ হয়ে, নয়তো ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: