ইলেক্ট্রনিকস পণ্য নয়, এবার ভিক্ষুক তৈরি করছে চীন!

প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০১৬, ০৬:১০ এএম

এতদিন চীনের তৈরি নানা ইলেক্ট্রনিকস পণ্য রফতানি হতো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু এবার সুস্থ মানুষের হাত-পা ভেঙে তাদের ভিক্ষুক বানিয়ে মালয়েশিয়ায় পাচার করছে চীনের একটি অপরাধী চক্র। অবাক হলেও নিষ্ঠুর এ ঘটনা ঘটছে।

অপহরণের পর শিশুদের হাত-পা ভেঙে তাদের দিয়ে ভিক্ষা করাচ্ছে ওই অপরাধী চক্রটি। চক্রটি অপহরণ করা শিশুদের হাত-পা ভেঙে বিকলাঙ্গ বানিয়ে তাদেরদিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতে বাধ্য করাচ্ছে। আর অপহৃত শিশুদের মধ্যে যাদের বয়স তুলনামূলক বেশি তাদের টুরিস্ট ভিসায় মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতেনামানো হয়।-খবর সম্প্রতি মালয়েশিয়ার ‘দ্য স্টার’ পত্রিকা

চীনা অপরাধী দলটি পরিচালনা করেন চীনের দঙ্গুয়ান এবং জেংজ়ৌ জেলার দুই ভাই। এদের মধ্যে লাহকেহ নামের এক ভাই মূলহোতা। অপরাধীরা চীনের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে শিশুদের অপহরণ করে থাকে। পরবর্তীতে তাদের হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গ বিকলাঙ্গ করে বানানো হয় ভিক্ষুক। এসব ভিক্ষুককে বিভিন্নদর্শনীয় স্থানে বসিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করান তারা।

অপরাধীদের নিষ্ঠুরতায় বিকলাঙ্গ শিশুদের প্রায় সবাই স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন। অনেকে মারাও যায়। যারা বেঁচে থাকেন তাদের সারাজীবনই অপরাধী চক্রের জন্য ভিক্ষাবৃত্তি করে যেতে হয়। মালয়েশিয়ায় পাচার হওয়া এসব ভিক্ষুকে দেখভালো করে আরেকটি অপরাধী চক্র। তারা কমিশনের ভিত্তিতে মূল অপরাধীদের সঙ্গে কাজ করেন।

দ্য স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়ার বিভিন্ন টুরিস্ট স্পটে প্রায় ৩০জন ভিক্ষুক ভিক্ষা করেন। তারা প্রায় সবাই এ চক্রের শিকার। দিনে যে পরিমাণ টাকা ভিক্ষা করে আয় করেন তার পুরোটাই হাতিয়ে নেয় চক্রটি। এসব ভিক্ষুককে একটি হোটেলের কক্ষে গাদাগাদি করে রাখা হয়। ঠিক মত খাবারও দেওয়া হয় না।

সিং ইয়ান নামে এক শিশু ভিক্ষুক জানায়, সে ছোটবেলায় সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠছিলেন। শিশু বয়সেই তাকে অপহরণ করেন অপরাধীরা। পরে তার উপর অত্যাচার চালিয়ে বিকলাঙ্গ করা হয়। আর যখন একটু বড় হন তখন দেশের বাহিরে পাঠিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামিয়ে দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, এ অপরাধীদের অনেক বড় একটি চক্র আছে। এ চক্রটি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে থাকেন।

ডো ফিং নামে এক ভিক্ষুক বলেন, ‘আমরা যা আয় করি তার ৫০ ভাগ অপরাধী চক্রটির সর্দারকে দিতে হয়। আর ১০ ভাগ খরচ হয় ট্যাক্সি ভাড়াতে। আর বাকি যা থাকে তা দিয়ে কোনোমতে দিন চলে। আমরা খুব কষ্টে আছি। আমরা এখান থেকে মুক্তি পেতে চাই।’

চীনা দূতাবাসের এক কর্মকর্তা সাংহাইয়িস্ট নামের এক পত্রিকাকে বলেন, ‘চীনের অপরাধী চক্রের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় ভিক্ষাবৃত্তি নতুন কিছু নয়। অনেকবার চীনা দূতাবাস তাদের হোতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়েছে। তারপরও চক্রটি এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: