নদীতে ব্রিজ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে ৪ উপজেলার মানুষ
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর কাজিরাপাড়া এলাকার ঝিনাই নদীর উপর ও কাশিল কেবিএন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ঝিনাই নদীতে ব্রিজ না থাকায় ৪ উপজেলার সাধারন মানুষের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। সেই সাথে বেড়েছে দুর্ভোগ। দুই এলাকায় ব্রিজ না থাকায় বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন নৌকা করে প্রায় ১০ হাজার মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে নদী পারাপার হচ্ছে।
কাঞ্চনপুর ও কাশিলের ঝিনাই নদীতে ব্রিজ না থাকায় বেশি দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নদীর ওপারের ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় সহশ্রাধিক শিক্ষার্থীর। প্রতিদিন নৌকা করে পারাপার হতে হচ্ছে মির্জাপুরের আদাবাড়ি গহর আলী উচ্চ বিদ্যালয়, বাসাইলের কাঞ্চনপুর এলাহিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা, কাঞ্চনপুর দক্ষিণপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাশিল কেবিএন উচ্চ বিদ্যালয়, কাশিল আব্দুল কাদের আব্দুল খালেক দাখিল মাদরাসা, হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিম খানা, কাশিল বটতলা শাখার শাহীন ক্যাডেট স্কুল সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের।
এছাড়া মির্জাপুর, দেলদুয়ার, সখীপুর ও বাসাইল উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের।
জানা যায়, দেলদুয়ার উপজেলার নাটিয়াপাড়া থেকে বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর সড়কের ঝিনাই নদীর উপর ১৯৯৮ সালে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। পরে গত ২০১৫ সালের আগস্টে বালু বহনকারী একটি ট্রলারের ধাক্কায় ওই সেতুটির একটি পিলার ও উপরের কিছু অংশ ভেঙে যায়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় যাতায়াত।
একই সালে কাশিল ভায়া বল্লা-নাটিয়াপাড়া সড়কের ঝিনাই নদীতে সেতু নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৪ বছর ব্যবহারের পর সেতুটির নিচের মাটি সরে গিয়ে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে যায়। ফলে এখানেও যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে একই বছরে ফুলকি-করটিয়া সড়কের দাপনাজোর এলাকায় ঝিনাই নদীতে সেতু নির্মাণ করা হয়। এ সেতুটিরও পিলারের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মূলত পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় নদী খননের নামে ড্রেজিংয়ের ফলে ঝিনাই নদীতে প্রতিবছর ব্যাপক ভাঙন হয়। এতে ঝিনাই নদীর পার্শবর্তী শ’ত শ’ত বাড়ি-ভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও নথখোলা ব্রিজ, নথখোলা স্মৃতি স্তম্ভ, কেবিএন উচ্চ বিদ্যালয়, নথখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যাপক ক্ষতি ও শহীদ মিনার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
কাশিল কেবিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি পরীক্ষার্থী মিম আক্তার বলেন, ব্রিজটি না থাকায় প্রতিদিন জীবনের ঝুকি নিয়ে নৌকা করে পারাপার হতে হচ্ছে। স্কুলে যেতেও সময় বেশি লাগে। মাঝে মধ্যেই নৌকা ডুবে যায়।
কাশিল দক্ষিণ পাড়ার নুরজাহান বেগম বলেন, কত ইঞ্জিনিয়ার-টিঞ্জিনিয়ার মাপ ঝুক করল, কত সাংবাদিক ছবি তুলল কিন্তু ব্রিজ তো আর অইল না।
কাঞ্চনপুর ছনকাপাড়ার সাইফুল ইসলাম বলেন, কাজিরাপাড়া এলাকার ঝিনাই নদীর উপর একটি ব্রিজের অভাবে প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও গবাদি পশু পারাপারের সময় তাদের চরম বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, কাঞ্চনপুর ও কাশিলে কোমলমতি শিশু-কিশোররা জীবনের ঝুকি নিয়ে নৌকা করে নদী পারাপার হয়ে স্কুুলে যাতায়াত করছে। অতিরিক্ত মানুষ নিয়ে নৌকা পারাপারের কারনেও মাঝে মধ্যেই নৌকা ডুবে যায়।
এছাড়াও এখানে প্রতিদিন নৌকা করে পারাপার হতে জনপ্রতি ৫ টাকা ও মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে লাগে ১০টাকা। দুইটি নদীতে নৌকা দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ যাতায়াত করছে। প্রতিবছর ঝিনাই নদীতে ভাঙনরোধে সরকার যে পরিমান টাকা খরচ করছে, তাতে এতদিনে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা যেত।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুছ ছাত্তার বলেন, কাঞ্চনপুর, কাশিল ও দাপনাজোর এলাকার ঝিনাই নদীর উপর তিনটি ব্রিজের কাজই একত্রে শুরু হবে। অতিদ্রুতই ব্রিজের কাজগুলো শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: