যশোরে কার্বন কারখানার ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ৫ গ্রাম

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০১৬, ০৭:১৯ এএম

যশোর: পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়াই যশোর সদর উপজেলার রুপদিয়ায় পাটখড়ি পুড়িয়ে কার্বন তৈরি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে ‘খুলনা কার্বন ইন্ডাস্ট্রি’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পাটখড়ি পুড়িয়ে কার্বন তৈরির কারণে ওই এলাকার পাঁচ গ্রাম সব সময় কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকে। এ কারণে ওই গ্রামগুলোর মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। এলাকাবাসী কারখানা উঠিয়ে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভও করেছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনরাত ২৪ ঘন্টা ওই কারখানায় পাটখড়ি পোড়ানো হয়। চীন ভিত্তিক ওই কোম্পানি পাটখড়ি পুড়িয়ে ছাই দিয়ে কার্বন তৈরি করে থাকে। ওই কার্বন চলে যায় অন্য স্থানে। পাটখড়ি পোড়ানোর ফলে রুপদিয়ার এক অংশ, নরেন্দ্রপুর, হাটবিলা, মুনসেফপুর ও সাঁখারিগাতি গ্রামের বেশিরভাগ অঞ্চল কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকে। বসত ঘরের মধ্যে ধোঁয়া চলে যাওয়ায় বাড়িতে থাকতে পারছেন না অনেকে। কাশি, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানিতে ভুগছেন অনেকে। ধোঁয়া কমাতে ওই গ্রামের কয়েক নারী কারাখানার শ্রমিকদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। বরং তিরস্কারের শিকার হয়েছে অনেকে। পাটখড়ির সাথে এক ধরনের কেমিক্যাল দেয়া হয়। সে কারণে ধোঁয়া কালো হয়ে চোখমুখ জ্বলতে থাকে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় কারখানার মালিক মুরাদ হোসেনের সাথে। তিনি জানান, প্রায় তিন বছর আগে ওই এলাকায় কারখানাটি অবস্থিত। চায়না ভিত্তিক কোম্পানি এটি। এখানে পাটখড়ি পুড়িয়ে কার্বন তৈরি করে ফের বিদেশে রফতানি করা হয়। শতভাগ রফতানি ভিত্তিক বিদেশি একটি কোম্পানি। এই কোম্পানির ছাড়পত্র ঢাকা থেকে নেয়া। এনবিআরের অনুমোদনও আছে। অনুমোদনের বিষয়টি যশোরের পরিবেশ অফিসের অনেক অফিসার জানেন না। সে কারণে তারা বলতে পারে অনুমোদন নেই।

তিনি আরও জানান, কারখানায় ৩০টি চিমনি ব্যবহার করা হয় ধোঁয়া উপরে উঠানোর জন্য। একটি চিমনিতে সমস্যা হওয়ার ফলে ধোঁয়া নিচের দিকে যাচ্ছে। এই কারণে মহিলারা হঠাৎ কারখানায় আসে। এই দেখে সেখানে থাকা দুইজন চীনা কর্মকর্তাও অবাক হন।

তিনি বলেন, প্রত্যেকটি চিমনি ২৫ ফুট লম্বা। সামনে ৩০ ফুট করা হবে। ৩০ ফুট হলে সমস্যা থাকবে না। ৫৪ জন শ্রমিক এখানে কাজ করে। বছরের বর্ষাকালে তিন মাস বন্ধ থাকে কারখানা। এক শ্রেণির স্বার্থন্বেষী মহল কারখানার বিরুদ্ধে গ্রামের নারীদের লেলিয়ে দিতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এই বিষয়ে কথা হয় যশোরের পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক আতাউর রহমানের সাথে। তিনি জানিয়েছেন, ‘রুপদিয়া এলাকায় পাটখড়ি পুড়িয়ে কার্বন তৈরি করে কোন কোম্পানি আছে কি না তা আমার জানা নেই। ওই এলাকার এই ধরনের কোন কারখানার ছাড়পত্র আমরা দেয়নি। যদি ছাড়পত্র না থাকে তাহলে সেটি অবৈধ। সরেজমিনে কারখানা দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: