বাংলাদেশ আজ পারবে তো ?

প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০৬:৫৬ এএম

ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চূড়ান্ত প্রস্তুতিই হবে এশিয়া কাপ। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে বরাবরের মতো ফুটে উঠলো ব্যাটিং ব্যর্থতার করুণচিত্র। ১৬৬ রান তাড়া করতে নেমে ব্যাটসম্যানদের আত্মাহুতিতে খেই হারিয়ে প্রথম ম্যাচেই হারে ৪৫ রানের বড় ব্যবধানে। যদিও ব্যাটিং ব্যর্থতাকে ছাপিয়ে সাকিবের একটি ক্যাচ ছাড়ার ঘটনাকেই হারের বড় কারণ হিসেবে দেখছেন অনেকে। কিন্তু অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা সাকিবকে কোনোভাবে দুষতে রাজি নন। বরঞ্চ ব্যাটিং ব্যর্থতাতেই যে হার তা তিনি স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই উইকেটে ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করা সম্ভব ছিল। আমরা প্রস্তুতি ম্যাচেও ১৬০/১৬৫ রান করেছি। আমাদের যে ব্যাটিং ছিল তাতে এই রান করা সম্ভব ছিল। এই লক্ষ্য তাড়া করতে হলে আপনাকে জুটি গড়তে হবে। আমরা কোনো জুটি গড়তে পারিনি। একই সঙ্গে শুরুতে উইকেট হারিয়ে ফেলেছি। তাই শেষটায় আমরা আর পেরে উঠিনি।’ ভারতের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু করলেও আজ জয় দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আরেকটি সুযোগ রয়েছে। কারণ সামনে প্রতিপক্ষ আইসিসি’র সহযোগী দেশ সংযুক্ত আরব-আমিরাত। অবশ্য টি-টোয়েন্টি ফরমেটে সহজ প্রতিপক্ষ বলে কিছু নেই। এর আগে বাংলাদেশের আইসিসি’র সহযোগী দেশ নেদারল্যান্ডস, স্কটল্যান্ড, এমনকি হংকংয়ের বিপক্ষেও হারের লজ্জা রয়েছে। তবে গেল বছর থেকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের সামনে আরব আমিরাত উড়ে যাবে এমনটাই বিশ্বাস করেন দেশের ক্রিকেটেপ্রেমীরা।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ এশিয়া কাপে হেরেছিল আফগানিস্তানের কাছে। সেই আফগানদের হারিয়ে এবার মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা পেয়েছে এশিয়ার এই দেশটি। এই দলটির বেশির ভাগ ক্রিকেটারই পেশাদার নন। যদিও পাকিস্তানের এক সময়ের তারকা ক্রিকেটার আকিব জাভেদ দলটির প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে একবারই ২০০৮ সালে মুখোমুখি হয়েছিল দলটি। তবে সেটি ছিল ওয়ানডে ফরমেটে। ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৯৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছিল তখন আরব আমিরাতকে। তবে এবারই প্রথম দেখা হচ্ছে এই ফরমেটে অচেনা ক্রিকেট শক্তির সঙ্গে। তবে যতটা না ভয় আরব আমিরাতকে নিয়ে তার চেয়ে বেশি ভয় বাংলাদেশ দলকে নিয়ে। এখনও টি-টোয়েন্টি ফরমেটে নিজেদের সেরা জায়গাটি অর্জন করতে পারেনি মাশরাফির দল। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতা না থাকার কারণে পঁচা শামুকে পা কাটার যে ভয় তা থেকেই যাচ্ছে।

ভারতের বিপক্ষে ১৬৬ রান তাড়া করতে নেমে দেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালের অভাবটাই বেশি স্পষ্ট হয়। তার পরিবর্তে ওপেন করতে এসেছিলেন দেশের হয়ে মাত্র ২টি টি-টোয়েন্টি খেলা মো. মিঠুন। কিন্তু দলের আস্থার প্রতিদান তিনি দিতে পারেননি নিজের তৃতীয় ম্যাচেও। এর আগে ২০১৪ সালে তার অভিষেক হয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে তিনি সাজঘরে ফিরেছিলেন ০ রান করে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে দলে থাকলেও ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়াতে মাঠে নামার সুযোগ হয়নি। এবার তিনি আউট হলেন ১ রান করে। অন্যদিকে দলের তরুণ ব্যটিং ভরসা সৌম্য সরকার মাত্র ১১ রান করে আউট হয়েছেন। তবে সাব্বির তার নিজের যোগ্যতা অনুসারে করেছেন ৪৪ রান। যদিও আউট হয়েছেন বাজেভাবে কিন্তু সেই সময় রান বাড়ানোর জন্য এমন শট ছাড়া উপায় বা কি ছিল!

তবে দলের তরুণ ও নতুনদের তুলনায় একেবারে ফিকে ছিল অভিজ্ঞদের পারফরমেন্স। বিশেষ করে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ছিলেন ভীষণভাবে সমালোচিত। ক্যাচ ছাড়া, রান নিতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে রান আউট হওয়া আর বল হাতে মাত্র ১ উইকেট সাকিবের নামের প্রতি যে সুবিচার নয়। মুশফিকুর রহীম ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। কিন্তু তার কাছে দল যতটা আশা করেছিল তার ছিটে-ফোঁটাও দিতে ব্যর্থ তিনি। অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহও শেষে নেমে করেছেন মাত্র ৭ রান। টি-টোয়েন্টিতে শেষের দিকে ব্যাটসম্যানদের যে আক্রমণের নজির ভারত দেখিয়েছে সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। তবে আরব-আমিরাতের বিপক্ষে দলে যে দু’টি পরিবর্তন আসছে তা প্রায় নিশ্চিত। আজ দলে দেখা যেতে পারে নাসির হোসেনকে। থাকতে পারেন আরেক তরুণ নুরুল হাসান সোহানও। এটাই সুযোগ বিশ্বকাপের আগে সঠিক দলটিকে বেছে নেয়ার।#মানবজমিন

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: