‘খুন করে লাশ কাঁধে নিয়ে কবরে নেয় ওরাই’

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০১:১৪ পিএম

আজাহারুল ইসলাম রাজু: অপহরণের পর আটকিয়ে রেখে মুক্তিপণ চেয়েছিল, আবার খুঁজে বের করে দিতে কথা দিয়েছিল ওরা। পরে খুনও করে তারাই। ওরা এতটাই ভয়ঙ্কর যে, ওই লাশ কাঁধে করে কবরেও নিয়ে যায়। গত ২৯শে জানুয়ারি নৃশংসভাবে খুন হওয়া ধামরাইয়ের চরচৌহাট গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র শাকিল ও ইমরানের মা তাদের ভাসুর, ননদের ছেলে ও ছেলের বন্ধুদের উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলেন বলেন, ওরা কথাও দিয়েছিল বুকের ধনকে খুঁজে আনার। শুধু তাই নয়, মা বলে ডেকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিল ‘মা আপনারা চিন্তা করবেন না, দু’-একদিনের মধ্যে আপনাদের বুকের ধনকে খুঁজে ফিরিয়ে আনবো। এ কথা শুনে আনন্দে সন্তানহারা এই দুই মা কেঁদেকেটে ওদের দুই পা জড়িয়ে ধরেছিলেন। কিন্তু ফিরিয়ে আনলো ঠিকই তবে জীবিত নয়। ব্লেড দিয়ে গলা কেটে লাশ উপহার দিলো। মায়েরা বলেন, তারাই আবার লাশ দু’টি বহন করে কবরেও নিয়ে গেল। তখনো বুঝতে পারনি আমাদের ভাসুর, ননদের ছেলে ও তার বন্ধুরাই খুন করেছে ইমরান আর শাকিলকে। ‘আমরা কি করে বুঝবো আমার ভাসুরের ছেলে মিলটন, ননদের ছেলে রনি, চাচাতো ভাইয়ের ছেলে মালেক ও তার বন্ধুরাই কষ্ট দিয়ে আমার পুতেগো গলা কেটে খুন করেছে। আমি এ জ্বালা আর সহ্য করতে পারছি না।’ এমনি বিলাপ করতে করতে চিৎকার দিয়ে পাগলের মতো দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যান স্কুলছাত্র শাকিলের মা সুফিয়া বেগম ও ইমরানের মা জোসনা বেগম। এখন তাদের একটাই দাবি ওই খুনিদের ফাঁসি। আর ফাঁসি না হলে ওরা ছাড়া পেয়ে আবারো কারও মায়ের বুক খালি করতে পারে বলে আশঙ্কা এই দুই মাসহ এলাকাবাসীর।

শাকিল ও ইমরানের মাসহ এলাকাবাসী জানান, পুলিশ এখনো কিলার মালেক ও রনিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এছাড়া রনির মা মামলাটি তুলে নিতে হুমকিও দিচ্ছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুর থানার এসআই সফিকুল ইসলাম জানান, ধামরাইয়ের চর চৌহাট গ্রামের দুই স্কুলছাত্র খুনের ঘটনায় মিলটন, বাহাদুর, জহিরুল, শাহানুর, শামীমসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মূল কিলার মালেককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, ধামরাইয়ের চর চৌহাট গ্রামের আবুবক্কর সিদ্দিকের ছেলে ইমরান হোসেন ও দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিল গত ২৭শে জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার পাশের মির্জাপুর উপজেলা হারিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হন। গত ২৮শে জানুয়ারি বিকেলে অপহরণকারীরা মোবাইলে ফোন করে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে চিনে ফেলায় খুন করে অপহৃত দুই স্কুলছাত্রকে। এরপর ২৯শে জানুয়ারি সন্ধ্যায় ধামরাইয়ের চরচৌহাট গ্রামের সীমান্ত থেকে ২০০ গজ দূরে মির্জাপুর উপজেলার হারিয়া গ্রামের ময়ূরভাঙ্গা এলাকার লেবুক্ষেত থেকে তাদের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরেরদিন উদ্ধার করা হয় রক্তমাখা টিস্যু, ব্লেড। #মানবজমিন

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: