ঘুরে দেখা তাজহাট জমিদার বাড়ী
রংপুর জেলার তাজ হাট,ডিমলা,কাঁকিনা,মন্থনা,পীরগঞ্জ,বর্ধণকোট ইত্যাদি এলাকায় বেশ কিছু বিখ্যাত জমিদার বংশ ছিল।তাদের ছিল বিশাল আয়তনের সুন্দর সুন্দর প্রাসাদ, যার মধ্যে তাজহাট জমিদার বাড়ি সর্বাধিক বিখ্যাত।
শি খধর্ম থেকে হিন্দু ধর্মে ধমন্তরিত মান্নালাল রায় ছিলেন তাজহাট জমিদার বংশের প্রতিষ্টাতা।আনুমানিক ১৭০৭ সালে তিনি পাঞ্জাব থেকে ব্যবসা করার উদ্দ্যেশে এদেশে আসেন এবং রংপুরের মাহীগঞ্জে বসবাস শুরু করেন।সে সময় মাহীগঞ্জ ছিল রংপুরের জেলা সদর। তিনি ছিলেন পেশায় স্বর্ণকার। ধারণা করা হয় তাঁর আকর্ষণীয় “তাজ” বা“ রত্ন” খচিত মুকুটের কারণে এই এলাকার নামকরণ হয় তাজহাট।
মান্নালাল রায় তাঁর জীবদ্দশায় অনেক ভ’-সম্পত্তির মালিক হন এবং ক্রমশঃ রংপুরের অনেক এলাকা নিজের আয়েত্বে নিয়ে আসেন। তাঁর নাতি ধনপাত লাল রায় বিয়ে করেন নয়া ধমুকার রতন লাল রায়ের নাতনীকে। রতন লাল রায় ও পাঞ্জাব থেকে অভিবাসন গ্রহণ করেন।ধনপত রায়ের নাতি উপেন্দ্রলাল রায় অল্প বয়সে মারা যাবার কারণে জমিদারী দায়িত্ব তার কাকা “মুনসেফ” গিরিধারী লাল রায়ের হাতে এসে পড়ে। নিঃসন্তান হওয়ার কারণে তিনি কোলকাতার জনৈক গোবিন্দ লালকে দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেণ। গোবিন্দ লাল ১৮৭৮ সালে এই জমিদারী ও উত্তরাধিকারী হন। তিনি ছিলেন খুবই স্বাধীনচেতা এবং জনপ্রিয়।ফলে তিনি ১৮৮৫ সালে “রাজা” ১৮৯২ সালে “রাজা বাহাদুর” এবং ১৮৯৬ সালে “মহারাজা” উপাধি গ্রহণ করেণ।১৮৯৭ সালে এর ভুমিকম্পে নিজ বাড়ি ধংসস্তুপের নীচে পড়ে তার মৃত্যু হয়।১৯০৮ সালে তার ছেলে মহারাজা কুমার গোপাল লাল রায় জমিদারীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেণ।
প্রাসাদটি রংপুর শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিন পূর্বে অবস্থিত। পূর্বমুখী দোতলা এ বিশাল প্রাসাদটির দৈর্ঘ্য ৭৬.২০ মিটার। বিদেশ থেকে আনা সাদা মার্বেল পাথরে তৈরী ১৫.২৪ মিটার প্রশস্ত কেন্দ্রীয় সিড়িটি সরাসরি দোতলায় চলে গিয়েছে।সেমি-করিন্থীয় স্তম্ভ দ্বারা সনর্থিত আটকোনা বিশিষ্ট ড্রামের উপর স্থাপিত গম্বুজটি প্রসাদেও মাঝ বরাবর ছাদের কেন্দস্থলে অবস্থিত। সিড়ির উভয় পাশে দোতলা পর্যন্ত ইটালীয় মার্বেলের ধ্রুপদী রোমান দেবদেবীর মুর্তি দ্বারা সজ্জিত ছিল।সে গুলো অনেক আগেই হারিয়ে গিয়েছে।
প্রাসদের সম্মুখ ভাগের দু’প্রান্তে সেমি-আটকোনা বিশিষ্ট উদ্গত ও মধ্য ভাগে একটি ৯.১৪ মিটার উদ্গত বারান্দা রয়েছে। উক্ত বারান্দার ছাদেও উপওে চারটি সুসজ্জিত করিন্থীয় স্তম্ভ ও চাল বিশিষ্ট দুটি কক্ষ রয়েছে।প্রাসাদটির ভ’মি নক্সা ইংরেজী (ইউ) এর ন্যায় যার পশিচম দিকে উমক্ত । প্রাসাদেও নীচ তলায় প্রবেশ পথের পশ্চাতে ১৮.২৯মি./১৩.৭২মি.মাপের হল ঘর রয়েছে।প্রাসাদ অভ্যন্তরের পুরোভাগ জুড়েই আছে ৩ মিটার প্রশস্ত বারান্দা। তাছাড়া উপড় তলায় ওঠার জন্য প্রাসাদে কাঠের দুটি সিড়ি রয়েছে। সিড়ি দুটির একটি উত্তর বাহুর মধ্যরর্তী স্থানে অপরটি পূর্ব বাহুর দক্ষিন প্রান্তে। এ প্রাসাদেও মোট ২২টি কক্ষ আছে।
দায়িত্ব রত গোপলী রানী বলেণ- ধারণা করা যায়, বিংশ শতকের শুরুর দিকে মহারাজা কুমার গোপাল রায় এই প্রাসাদ নির্মাণ করেণ। ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত প্রাসাদটি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বেঞ্চ হিসেবে ব্যবহৃত হয় ১৯৯৫ সালে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর ইমারতটিকে সংরক্ষিত পুরাকৃতি হিসেবে ঘোষণা করে। এই প্রাসাদেও অন্যান্ন স্থাপত্যিক গুরুত্ব উপলব্দি কওে বাংলাদেশ সরকার ২০০২ সালে এখানে রংপুর জাদুঘর স্থানান্তরের সিদ্বান্ত গ্রহণ করে। তদানুযায়ী ২০০৫ সার থেকে এই প্রাসাদেও অংশ বিশেষ “রংপুর জাদুঘর” হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: