প্রকা‌শ্যে গোপন রো‌গের চি‌কিৎসা করেন আয়েশা

প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০১৯, ০৫:১১ পিএম
রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত শিশুমেলা। যেখানে প্রতিদিন হাজার দর্শনার্থীদের ভীড় জমে। দুর দুরান্ত থেকে সন্তানদের নিয়ে একটু প্রশান্তির আশায় ছুটে আসেন বাবা-মা। শিশুমেলার দ্বিতীয় গেইট দিয়ে বের হওয়ার সময় চোখে পড়বে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধাকে। কয়েকটি তাবিজ আর কিছু কুড়ি নিয়ে বসে আসে রোদ্দের মধ্যে। আর সেই সাথে চোখে পড়বে নারী-পুরুষের গোপন রোগ, চর্ম-যৌন রোগসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করা হয় এমন লিফলেট। আসলেই কি তিনি পারবেন এসব রোগের চিকিৎসা করতে? বিডি২৪লাইভের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আরেফিন সোহাগের সাথে কথা হয় ৬৫ বছরের বৃদ্ধা আয়েশা বেগমের। তিনি জানান দীর্ঘ ৩০ বছরের রোগ সারার কথা ও তাবিজ ব্যবসার কথা। জন্ডিস, নারী-পুরুষের গোপন রোগ, চোখের ছানি পড়া ও কম দেখা, পুরাতন জ্বর, এলার্জি, বিখাউজ, চর্ম-যৌন রোগ, সেত রোগ, হাড়ভাঙ্গা, কিডনী রোগসহ হাজারও রোগের চিকিৎসা করেন তিনি। আপনার বাড়ি কোথায়? স্বামী সন্তান নেই? এই প্রশ্নের জবাবে আয়েশা বলেন, আমার বাড়ি বিক্রমপুর। এখন মিরপুরের একটা সরকারি যায়গাতে থাকি। আমার দুই মেয়ে ছিল এখন তারা আমার কাছে নেই। আমার স্বামী একটা ভণ্ড, আমাকে রেখে সে ২৫টা মেয়ের সাথে খারাপ কাজ করেছে। আমার যৌবন কাল শেষ করে দিয়েছে ওই লোকটা। আমি এখন পেটের দায়ে এই ব্যবসা করছি। যা ইনকাম করি তা দিয়ে পেটে খাই আর ঘর ভাড়া দেই। আয়েশা বেগমের সামনে রাখা লিফলেট। আপনি কত বছর ধরে এই ব্যবসা করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। এখানে প্রায় ২০ বছর ধরে তাবিজ বিক্রি করি। আমার কাছে অনেক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। আপনি এই ব্যবসায় কি করে আসলেন? আপনি কি কোথাও থেকে শিক্ষা নিয়ে এই রোগ নির্নয় করছেন? জবাবে বলেন, না, আমার স্বামী যখন আমাকে ছেড়ে চলে যায় আমি তখন পেটের দায়ে এই পথ বেছে নিয়েছি। আস্তে আস্তে আমি রোগ সারাতে শুরু করি। আমার কিছু গোপন বিষয় আছে আমি তা বলবো না। আমি মুখ দেখে রোগ বুঝতে পারি। আবার অনেকে আছে যারা আমার কাছে এসে নিজের রোগের কথা বলে তাবিজ নিয়ে যায়। কি কি রোগের চিকিৎসা করেন আপনি? জাবাবে তিনি বলেন, জন্ডিস, নারী-পুরুষের গোপন রোগ, চোখের ছানি পড়া ও কম দেখা, পুরাতন জ্বর, দাউদ, এলার্জি, বিখাউজ, চর্মরোগ, সেত রোগ, হাড়ভাঙ্গা, কিডনী রোগসহ হাজারও রোগের চিকিৎসা করি। আয়েশা বলেন, আমার কাছে অনেক দুর থেকে রোগী আসে। আমি সব রোগ সারাতে পারি। আমি কারো কাছে টাকা চেয়ে নেই না। যে যা খুশি হয়ে দেয় আমি সেটাই নিই। আমি এখানে বসে ২০ বছর ধরে এই চিকিৎসা করছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি বলেন, ‘আমি এই মহিলাকে এখানে অনেক দিন ধরেই দেখছি। আমি এই পাশেই থাকি। এই মহিলা মানুষের সাথে প্রতারণা করে। একটা তাবিজ দিয়ে সে কি করে রোগ সারবে? আমি দেখেছি এই মহিলা রাত হলেই কিছু লোকের সাথে কি সব আলাপ করে। আমার মনে হয় সে দিনে এই ব্যবসা করে আর রাতে মাদক ব্যবসা করে।’ আমাদের আশপাশে যখন মানুষের ভীড় তখনই এই আয়েশার মত কেউ এসে রোগ সারানোর কথা বলে প্রতারণা করে চলছে প্রতিনিয়ত।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: