পৌরসভার ঝুঁকিপূর্ণ বাজারে বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৩ জুলাই ২০১৯, ১১:৫২ পিএম
নাটোর শহরের নিচাবাজার এলাকায় পৌরসভা নিয়ন্ত্রিত বাজরের দু’টি ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও ভবনগুলোর নিচে প্রতিদিন বসছে শাক-সবজি, মাছ-মাংসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার। প্রতিনিয়তই খসে পড়ছে ভবনের পলেস্তরা। প্রায়ই ছোট খাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে ব্যাপক প্রাণহানির আশংকা থাকলেও জরাজীর্ণ ওই দ্বিতল ভবন দু’টি সংসস্কারের উদ্যোগ নেই। এ নিয়ে পৌর নাগরিকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে অর্থের যোগান না থাকায় সংস্কারের উদ্যোগ নিতে পারছেন বলে নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌরবাসী ভবন দু’টি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছে। নাটোর শহরের প্রাণ কেন্দ্র নিচাবাজার এলাকায় গড়ে ওঠা পৌরসভার নিয়ন্ত্রিত সবচেয়ে বড় বাজারের দু’টি ভবন জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় ২০ বছর আগে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এই বাজার সংলগ্ন রয়েছে পৌরসভা কার্যালয়। কিন্তু নজর পড়েনা পৌর কর্তৃপক্ষের। দীর্ঘ দিনেও সংস্কারের উদ্যোগ নেই। ফলে পলেস্তরা খসে পড়ে ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। প্রাণহানির শঙ্কা থাকলেও জীবন জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিদিনই ওই ভবনের নিচে বসে বাজার। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয় এই বাজার। ব্যবসায়ী সহ ক্রেতারা ঝুঁকি নিয়েই বাজারে আসেন নিত্য দিনের প্রয়োজন মেটাতে। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ খসে পড়া পলেস্তরা ঠেকাতে ছাদের নিচে টিনের ছাউনি দিয়েছেন। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই প্রতিষ্ঠান চালাতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যাপক প্রানহানি ঘটার আগেই সংস্কারের দাবি পৌর নাগরিকদের। মাংস ব্যবসায়ী মোহম্মদ মোক্তার হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়ে তার দুই কর্মচারী আহত হয়। এর পর তিনি নিজের উদ্যোগে ধসে পড়া পলেস্তারার নিচে টিনের ছাউনি দিয়েছেন। মাছের আড়ৎদার আলতাফ হোসেন জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। পাশেই পৌরসভা কার্যালয়। তবুও ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবন সংস্কারের উদ্যোগ নেই। মুরগী বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, পাশেই মেয়রের বাড়ি ও পৌর ভবন। তবুও এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চোখে পড়েনা কারো। প্রতিদিনই ছাদের ধসে পড়া পলেস্তারার সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই পলেস্তারা ধসে পড়ছে। সবজি ব্যবসায়ী আয়চান আলী বলেন, সব সময় আতংকের মধ্যে থাকতে হয়। মাঝে মধ্যে ক্রেতাদের মাথার ওপর পলেস্তারা ঝড়ে পড়ে। তাই অনেকেই তার দোকানে আসেন না। সড়কের ধারে বসা ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে বাজার করেন তারা। দোকান কর্মচারী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, সব সময় আল্লার কালাম পড়তে হয়। দোতালায় বসে কাজ করি। তাই আতঙ্কে থাকি কখন ভবনটি ধসে পড়ে প্রাণহানি ঘটবে। জীবনের তাগিদেই আতংক নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। ঔষধ ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জীবন জীবিকার প্রয়োজনে তারা বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই প্রতিষ্ঠান চালু রেখেছেন। নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি ভবন দু’টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে স্বীকার করেন বলেন, 'বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়ীদের সরানো সম্ভব হয়নি। সবজি ও মাছ-মাংসের বাজার ইজারা দেওয়া হলেও আমিনুল হক গেদু ভবনের ভাড়াটিয়াদের কাছে থেকে ভাড়া উত্তোলন করা হচ্ছেনা। অর্থ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু অর্থের যোগান না থাকায় নাটোর পৌর সভার উন্নয়ন কর্মকান্ড করা সম্ভব হচ্ছেনা। চলতি অর্থ বছরে অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ভবন দুটির সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: