গড়ে প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে ১০৭ জন

প্রকাশিত: ০৯ জুলাই ২০১৯, ০২:১১ এএম
ডেঙ্গু আতঙ্কে ঢাকাবাসী। ভয়াবহ হচ্ছে ডেঙ্গু, পাল্টে যাচ্ছে ধরন, বাড়ছে প্রকোপ। প্রতিদিন গড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে ১০৭ জন। চলতি বছরে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৮০৩ জন। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত এক চিকিৎসকসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। এই রোগ প্রতিরোধের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির পরামর্শ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কেবল জুলাই মাসে গড়ে প্রতিদিন একশোরও বেশি রোগী ডেঙ্গু নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে চলতি মাসের প্রথম ৬ দিনে এই সংখ্যা ৬৪৩ জন। আর চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ৮০৩ জন। তবে ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনায় পূর্ব প্রস্তুতি থাকায় মৃতের সংখ্যা সে অনুপাতে বাড়েনি বলে দাবি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। এদিকে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ বা সচতেনতা সৃষ্টিতে সিটি করপোরেশন ব্যর্থ বলে মনে করেছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুযায়ী গেল ছয় দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬৪৩ জন।অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ১০৭ জন করে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংখ্যা আরও অনেক বেশী। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৪৫৯ জন। গত রোববার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক চিকিৎসকসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে আরও একজনের মৃত্যুর সংবাদ কন্ট্রোল রুমে এসেছে। তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ গতবারের চেয়ে বেশিই মনে হচ্ছে। আর সেই সঙ্গে জটিলতাও বেশি হতে দেখা যাচ্ছে। ধরন পাল্টে যাচ্ছে। ডেঙ্গু চার ধরনের ভাইরাস থেকে হয়। ডেঙ্গুর জন্য আলাদা চার ধরনের ভাইরাস আসে। আমরা মেডিকেল টার্মে বলি ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ এবং ডেন-৪। একবার ডেঙ্গু হলে ডেঙ্গুর একটি ভাইরাসে ইউমোনিটি হয়। বাকি তিনটি থেকে যায়। এই তিনটিতে আবার আক্রান্ত হতে পারে। ফলে একবার কারও এক ধরনের ডেঙ্গু হলে পরে আর সে ধরনের না হলেও অন্য আরেক ধরনের ডেঙ্গু হতে পারে। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া হয় এডিস মশার কামড়ে। তাই জ্বর হলেই আর হেলাফেলার সুযোগ নেই। আমরা অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশ ডেঙ্গু হচ্ছে ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু, ৭ থেকে ১০ দিনের জ্বরে এটা সেরে যায়। এটাতে তেমন কোনো ক্ষতির কারণ থাকে না। আমার এ চার বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছুই নেই। কতজন আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সাঈদ খোকন বলেন, গেল জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে ২ হাজার ১০০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৭৪ জন রোগী বাসায় চলে গেছেন। ৩০০ জন চিকিৎসাধীন আছেন। মারা গেছেন ২ জন। ১৭ কোটি মানুষের দেশ। এখন বলুন, এটা আতঙ্কিত হওয়ার মতো অবস্থা কিনা। এটা আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি নয়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: