বন্যার চরম অবনতি, দেড়শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০১৯, ০৩:২১ এএম
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে প্রমক্তা যমুনা, ঝিনাই ও সুবর্নখালী নদীর পানি ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকার বন্যার পরিস্থির চরম অবনতি হয়েছে। সরিষাবাড়ী পৌরসভাসহ উপজেলার সাতপোয়া, পোগলদিঘা, কামরাবাদ, পিংনা, ভাটারা ইউনিয়নের গ্রাম গুলোর মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া ডোয়াইল, মহাদান ও আওনা ইউনিয়নের কিছু অংশ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলার প্রায় দেড় শতাধিক গ্রামের পানিবন্দী পরিবারের সদস্যরা বাড়ি-ঘর ছেড়ে গরু-ছাগল, হাস-মুরগী নিয়ে উচু রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানাগেছে। পৌর এলাকার শিমলাপল্লী, তাড়িয়াপাড়া, চাদ শিমলা, শিমলা বাজার, ঐতিহাসিক গণময়দান, ইস্পাহানী এলাকা পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় তাড়িয়াপাড়ার ফরিদ উদ্দিন, সিদ্দিক মিয়া, সুরুজ আলী, আবু সামার বাড়ী ঘর এবং আসবাব পত্র বন্যার পানির শ্রোতে ভেসে গেছে। বিদ্যুতের পিলার ভেসে যাওয়ায় এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। উপজেলার পানি বন্দি অসহায় পরিবারের সদস্যরা রেলষ্টেশন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং প্রেসক্লাবে রাত যাপন করছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা কবলিত অধিকাংশ স্কুল, কলেজ, সরকারী বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোচিং সেন্টার, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। সরিষাবাড়ী রেল ষ্টেশন, সরিষাবাড়ী থানা, সরিষাবাড়ী হাসপাতাল, সরিষাবাড়ী খাদ্য গুদাম, সরিষাবাড়ী ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন, আলহাজ জুট মিল, এআরএ জুট মিল, পপুলার জুট মিলে পানি প্রবেশ করায় স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। শিমলা বাজার, আরামনগর বাজার এলাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে পানি উঠায় সকল প্রকার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে আরডিএম স্কুলের পাশে প্রধান সড়কে অস্থায়ী কাঁচা বাজার বসেছে। বন্যাদুর্গত পরিবার গুলো প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ইতিমধ্যে বন্যার্তদের মধ্যে খাদ্য এবং খাবারের পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য সরকারী সাহায্য মিললেও সিংহ ভাগ অসহায় মানুষের পাশে বেসরকারী ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান দাড়ায়নি বলে বনার্তরা জানান। বন্যার পানির স্রোতে কেন্দুয়া, লোকোসেড, পোষ্ট অফিস এলাকায় রেললাইনের নীচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। শিমলা বাজার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে পানির স্রোতের কারণে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ভেঙ্গে যাওয়ায় সড়ক যোগাযাগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। এলাকার মানুষ নৌকা, ভেলা, রিক্সা ভ্যান দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সরিষাবাড়ীর সাথে তারাকান্দি-ভুয়াপুর সড়ক বাঁধ পিংনা ইউনিয়নের রাধানগর এলাকায় সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানির তীব্র স্রোতে যে কোন সময় ভেঙ্গে গেলে ভুয়াপুরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ফলে যমুনা সার কারখানার উৎপাদিত ইউরিয়া সার কারখানা থেকে উত্তর বঙ্গের ১৬ জেলায় সার পরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব উদ্দিন আহমদ জানান, বন্যা দূর্গতদের জন্য সরকারী বরাদ্ধ বিতরন করা হয়েছে। আরও সাহায্য এলে তা দ্রুত বিতরণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: