আফগান সীমান্তের সেনাদের কাশ্মীর সীমান্তে পাঠাতে চায় পাকিস্তান

প্রকাশিত: ১৪ আগষ্ট ২০১৯, ০৪:০৬ এএম
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসাদ মাজিদ খান বলেন, কাশ্মীর পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। পরিস্থিতি এমন হলে পাকিস্তানের আফগান সীমান্তে নিয়োজিত সেনাদের কাশ্মীর সীমান্তে মোতায়েন করার কথা ভাবছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ এমন সিদ্ধান্ত নিলে তালিবানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলমান শান্তি আলোচনায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এডিটোরোরিয়াল বোর্ডকে সোমবার (১২ আগস্ট) দেয়া সাক্ষাৎকারে মাজিদ খান জোর দিয়ে বলেন, কাশ্মীর ও আফগানিস্তান আলাদা দুটি ইস্যু, তিনি এ দুটোকে এক করতে চান না। তার দেশ আমেরিকা ও তালেবানের আলোচনার সফলতাও কামনা করা সত্ত্বেও পাক রাষ্ট্রদূত বলেন, অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় দমন-পীড়ন খুব খারাপ সময়ে শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা পশ্চিম সীমান্তে বিপুল সেনা মোতায়েন করে রেখেছি। তবে কাশ্মীর পরিস্থিতির যদি অবনতি হয় তাহলে আমরা পূর্ব সীমান্তে সেনা পুনঃমোতায়েন করব।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসলামাবাদ এই মুহূর্তে পূর্ব সীমান্ত ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে চিন্তা করছে না। ইসলামাবাদ এখন পূর্ব সীমান্ত পরিস্থিতি ছাড়া অন্যকিছুই ভাবছে না বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত। ভারত পাকিস্তানের মধ্যে গত সপ্তাহে তেমন কোনো যোগাযোগই হয়নি জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। তবে ঠিক কতটা খারাপ তার ব্যাখ্যায় যাননি আসাদ মাজিদ খান। ‘পরমাণু অস্ত্রধর ও বড় সামরিক শক্তিমান দুটি দেশ আমরা। এবং আমাদের সংঘাতময় ইতিহাস রয়েছে। এক্ষেত্রে আমি আপনাদের সেদিকটা চিন্তা করতে বলছি না। তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে তা অনেক খারাপই হবে।’ বলছিলেন রাষ্ট্রদূত। এদিকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের ভারতীয় সিদ্ধান্তকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘গালে থাপড়’ স্বরুপ বলে উল্লেখ করেছেন আসাদ মাজিদ খান। আজ মঙ্গলবার নিউ ইয়র্ক টাইমসে এক নিবন্ধে একথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত এই পাক রাষ্ট্রদূত। কিছুদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্ততা করে এর সমাধানের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার যে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নিল, একে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গালে একটি ‘থাপড়’ হিসেবে উল্লেখ করেন পাক রাষ্ট্রদূত। ড. সৈয়দ মাহমুদ আলী মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য উন্মুখ। তাই তারা তালেবানের সঙ্গে বিষয়টর সুরাহা করতে শান্তি আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। এই প্রচেষ্টায় সাফল্যের জন্য ইসলামাবাদের সহযোগিতা ওয়াশিংটনের কাছে এখন গুরুত্বপূর্ণ। ড. আলী বলেন, ‘ইমরান খান এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ব্যক্তিগত বোঝাপড়া ভালো। পাকিস্তান হয়তো সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে। ট্রাম্প ও ইমরানের সম্পর্ক বহুদিনের ২৫ বছর ধরে তারা পরস্পরকে চেনেন, যোগাযোগ আছে।’ পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক দি ডেইল টাইমস এক সম্পাদকীয়তে লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো জোট যদি জাতিসংঘ প্রস্তাব মেনে চলার জন্য ভারতের ওপর চাপ তৈরি না করে, তাহলে পাকিস্তানের উচিৎ আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য বন্ধ করে দেয়া। আফগানিস্তান-ভারতের বাণিজ্য পথ এবং পাকিস্তানের আকাশ ভারতের জন্য বন্ধ করে দেয়ার সুপারিশ করছেন পাকিস্তানের কেউ কেউ। চীনের ওপরও চাপ তৈরির কথা লিখেছে ডেইলি টাইমস। এ উপলক্ষে সেখানে ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ভারত সরকার। দু’জন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দুল্লাহসহ কয়েক শ কাশ্মীরি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা। এ ছাড়াও আট দিন ধরে কাশ্মীরিদের দৈনন্দিন চলাফেরায় ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে ভারত সরকার।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: