চাঁদাবাজ চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৩১ পিএম
চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে থাকা একাধিক মামলার আসামী ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ভুট্টোকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা এ দাবি জানান। এসময় তার অপসারণ ও বিচার দাবীতে স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন যুবলীগ নেতা কায়কোবাদ আকন্দ, মাজহারুল ইসলাম বাবুল, মোফাজ্জল হোসেন খোকা প্রমূখ। এসময় বক্তারা বলেন, রিক্সা চালক আনিসুর রহমান ভূট্টো কয়েক বছরে চাঁদাবাজী, সাধারন মানুষের জমি দখল করে কোটিপতি হয়েছে। সম্পদ অর্জনের রহস্য উদঘাটন করে ভূট্টোকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহবান জানান বক্তারা। পরে জেলা প্রশাসকের হাতে স্মারকলিপি দেয়া হয়। স্মারকলিপিতে একজন রিকশা চালক ভুট্টো থেকে বিভাবে একজন কোটিপতি আনিসুর রহমান ভুট্টো চেয়ারম্যানের উত্থান ঘটেছে তা তুলে ধরা হয়েছে। সেই সাথে চেয়াম্যান হবার পরও এলাকায় ভূমি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে তার এবং তার পরিবারের লোকজনের নানা অনিয়মের কথা তুলে ধরে চেয়াম্যান পদ থেকে অপসারণ ও বিচার দাবী করা হয়েছে। মানববন্ধনে যুবলীগ নেতা কায়কোবাদ আকন্দ বলেন, আনিসুর রহমান ওরফে ভুট্রো চেয়ারম্যানের পরিবারে চার ভাই ও চার বোন ছিল। কৈশর কাল থেকেই ভুট্রো ও তার তিন ভাই রিকশা, ভ্যান চালিয়ে দিনাতিপাত করত। ত্রিশালের সাইন বোর্ড বাসস্ট্যান্ড নামক স্থানে হত দরিদ্র রিকশা চালকদের নিয়ে সমিতি গঠন করে সুচতুর ভুট্টো। সে সমিতিতে জামানো হতদরিদ্র রিকশা চালকদের টাকা কৌশলে আত্মসাত করে তারা দুই ভাই মিলে সেখানকার একটি বিলের খাস জমি দখল করে। পরে সেই খাস জমির ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে একটি গ্রুপ অব কোম্পানীর কাছে বিক্রি করে টাকা নিয়ে আনিসুর রহমান ভুট্টো সিঙ্গাপুরে চলে যায়। এদিকে ভুট্টোর বড় ভাই আরসা ও তার দুই ভাই মিলে নানী ও খালাকে ঠকিয়ে নানার ১৪ কাঠা জমি প্রতারণার মাধ্যমে দখল করে আত্মসাত করে। ভুট্টো সিঙ্গাপুর থেকে এক বন্ধুর গচ্ছিত বেশকিছু টাকা মেরে দিয়ে দেশে ফিরে আসে। দেশে এসে সে তার লেবাস পাল্টে ভাল মানুষ সেজে টাকা পয়সা ছিটিয়ে আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মাজহারুল ইসলাম বাবুল বলেন, ভালুকার হাজারী বাজার নামক স্থানে খাস জমির ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে একটি ঔষধ কোম্পানীর কাছে বিক্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। নিজ এলাকায় ইউসুফ মুন্সির ছেলে খোকা মিয়ার জমি, বাড়িঘর জোড়পুর্বক দখল করে নেয়। এক ব্যক্তির ক্রয় করা জমির চার পাশে কাটাতারের বেড়া দিয়ে একটি কোম্পানীর কাছে বিক্রি করে দেয়। মোফাজ্জল হোসেন খোকা বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হন আনিসুর রহমান ভুট্টো। জামায়াতের সাথে আঁতাত করে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। আনিসুর রহমান ভুট্টো বিএনপির সাধারণ সদস্য ছিলেন বলেও জানান তিনি। কিন্তু জনপ্রতিনিধি হয়েও তার স্বভাব পাল্টায়নি। ইউনিয়ন পরিষদে নানা অনিয়মের পাশাপাশি জোরপূর্বক জমি দখল ও চাঁদাবাজিতে উঠেপড়ে লেগে যান এই চেয়াম্যান। তার দাপট আর অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে পুরো ইউনিয়নবাসী। তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুটি চাঁদাবাজি মামলা হয়। এছাড়া ভূমিদখল, হুমকি প্রদর্শন, অর্থ আত্মসাৎ, লুটপাটসহ একাধিক মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত ২১ আগস্ট ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর করা চাঁদাবাজির মামলায় ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন তার ছোট ভাই আছাদুলসহ ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন ভুট্টো চেয়ারম্যান। এদিকে জেলে থেকেও তার লোকজন দিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হুমি দিচ্ছেন বলে মানববন্ধন দেকে অভিযোগ করা হয়। ইউপি চেয়াম্যানের পদ থেকে অপসারণের পাশাপাশি তার দ্রুত বিচার দাবী করেছেন এলাকাবাসী।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: