দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে যা আগে হয়নি তা করে দেখালেন ওসি

প্রকাশিত: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:২০ পিএম
বাংলাদেশের শীর্ষে থাকা ১২শ' যৌনকর্মীর আবাসস্থল গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর এক যৌনকর্মীর লাশ দাফনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান। গতকাল রবিবার ওসি আশিকুর রহমানের উদ্যোগে এবং মসজিদের ইমাম, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং বাসিন্দাদের নিয়ে ঐ যৌনকর্মীর লাশ দাফন করা হয়। জানা যায়, ঢাকা রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের নির্দেশনায় ওসি আশিকুর রহমানের এই মানবিক গুনাবলি ইতোমধ্যে এই উপজেলাবাসীর দৃষ্টি কেড়েছে। সূত্র জানায়, ইতোপূর্বে এই যৌনপল্লীতে কোন যৌনকর্মী মারা গেলে, দাফন কাফন ছাড়াই মাটিচাপা দেয়া হতো। ওসি আশিকুর রহমান মাত্র ১মাস আগে যোগদান করেছেন গোয়ালন্দ ঘাট থানায়। তার যোগদান করার পর থানা পুলিশের কর্মকান্ডে অভূতপূর্ব সফলতা কয়েকগুণ বেড়েছে। যৌনপল্লী দৃষ্টিকটু নামকরণ পরিবর্তন করেছেন ওসি আশিকুর রহমান। যৌনপল্লীর নামকরণ করা হয়েছে দৌলতদিয়া পূর্বপাড়া। যৌনপল্লী নামের কারণে পল্লীর বাসিন্দা ও তাদের সন্তানরা নানা বঞ্চনার শিকার হন। এখন নাম পরিবর্তন হওয়ায় তারা কোন স্থানের বাসিন্দা সেটি বোঝা যাবে না। এই নামের কারণে অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এখানের বাসিন্দারা। এরও আগে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান ‘জনগণের দরবার’ নামে যৌনপল্লীর মধ্যে একটি অফিস কার্যালয় উদ্বোধন করেন। এখানে যৌনকর্মীদের বিভিন্ন অসুবিধা ও অভিযোগ গ্রহণ করেন ওসি। এখানে অভিযোগ জানাতে আসা যৌনকর্মীরা বলছেন, যৌনপল্লীর কয়েকটি প্রবেশ পথ ইতোপূর্বে বন্ধ থাকায় তারা মানবেতর দিন কাটাতেন। এখন ওসির হস্তক্ষেপে তারা নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন। ওসি আশিকুর রহমান জানান, কোন পথ বন্ধ করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমীচীন না। প্রবেশ পথও খোলা থাকবে, নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হবে। জনতার দরবারের উদ্বোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর হাজার হাজার বাসিন্দাদের প্রতিদিনই কোন না কোন সমস্যা নিয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় যেতে হয়। এতে তাদের যেমন অর্থের অপচয় হয়, অপরদিকে সময় নষ্ট হয়।‘মুজিব বর্ষের অঙ্গিকার, পুলিশ হবে জনতার’ এই প্রয়াসকে বাস্তবে রূপ দিতে পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এখানে প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তিনি নিজে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন মামলা, জিডি ও অভিযোগ গ্রহণ করেন। এদিকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর নারী ও শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছেন ওসি আশিকুর রহমান। তাদের যথাযথ চিকিৎসা, সন্তানদের লেখাপড়াসহ সার্বিক উন্নয়নের কথা ওসি ভাবছেন বলে সূত্র জানায়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: