এবার ঝড়ে লণ্ডভণ্ড আমেরিকা

প্রকাশিত: ০৬ আগষ্ট ২০২০, ০৬:৩৮ এএম
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে আরেক বিপর্যয়ের মুখে পড়লো দেশটি। স্থানীয় সময় গত সোমবার (৩ আগস্ট) রাত ১১টার (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল ৯টা) দিকে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নর্থ কারোলিনায় আঘাত হেনেছে ভয়াবহ হারিকেন ‘ইসাইয়াস’। বিদ্যুৎহীন নগরীগুলোয় বর্তমানে ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করছে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতি ধারণার চেয়েও বেশি হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে তিন থেকে চারদিন সময় লাগতে পারে। ইন্টারনেট ও ফোন সংযোগ বহু জায়গায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করছে না। সাম্প্রতিক সময়ের হ্যারিকেন স্যান্ডির চেয়েও বেশি এলাকাজুড়ে লোকজন এ মৌসুমি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইসাইয়েস নামের এ ঝড় আসছে বলে এক সপ্তাহ আগে থেকেই সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল। ৪ আগস্ট সকাল থেকেই নিউজার্সিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। ভোররাত থেকে ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। সঙ্গে ভারী বৃষ্টি। ঘণ্টায় ৬০ মাইলের বেশি বেগে বাতাস বইতে থাকে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ইলেকট্রিক লাইন পড়তে শুরু করে। বিদ্যুৎ চলে যায়। গাছ উপড়ে পড়তে শুরু করে। তিনটি রাজ্যে কয়েক ডজন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ৪ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। কয়েক লাখ মানুষ ঘরে আটকা পড়েছে। প্রযুক্তিময় জীবনধারায় ফোনের চার্জ নেই, ঘরে বিদ্যুৎ নেই, বৈদ্যুতিক আসবাবপত্র অচল হয়ে পড়েছে। আমেরিকার জনসমাজে এমন বিরূপ বাস্তবতা মোকাবিলার জন্য অধিকাংশ লোকজনের কোনও প্রস্তুতি নেই। ৪ আগস্ট বিকেল থেকেই নিউইয়র্ক, নিউজার্সির আকাশ পরিষ্কার হয়ে ওঠে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার তাণ্ডবে জনপদকে বিধ্বস্ত করে গেছে ইসাইয়েস ঝড়। নিউইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, মারিও নামের একজন ঠিকাদার কুইন্সের ব্রায়ারউড এলাকায় ১৪৩ স্ট্রিট/৮৪ অ্যাভিনিউয়ে গাড়িতে বসে ছিলেন। এ সময় একটি বিশাল ওকগাছ তার গাড়ির ওপর আছড়ে পড়লে ঘটনাস্থলেই মারিওর মৃত্যু হয়। ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ায় উডহ্যাভেনোয় অনেক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরো শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। জরুরি বিভাগ পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেছে। কোভিড-১৯ এর কারণে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে জরুরি বিভাগের কর্মীদের কাজ করতে হচ্ছে। নিউজার্সির রাজ্য গভর্নর বলেছেন, শুধু তার রাজ্যেই ১৫ লাখের বেশি মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ নেই। সবকিছু স্বাভাবিক হতে তিন থেকে চারদিনের বেশি সময় লাগবে। বিদ্যুৎ সরবরাহের কোম্পানি পিএসইঅ্যান্ডজি জানিয়েছে, ঝড়ো হাওয়া নিরাপদ স্তরে নামলেই তাদের ২ হাজার ৮০০ কর্মী দ্রুত কাজে নামবেন। রাতেও দমকা বাতাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝড় আটলান্টিকের পূর্ব দিকে সরে গেছে বলে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: