এইচএসসির ফল প্রকাশে সংসদে বিল উত্থাপিত, এক সংসদ সদস্যের আপত্তি

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:০৩ পিএম
করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে পরীক্ষা ছাড়াই ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে সংসদে তিনটি বিল উত্থাপিত হয়েছে, তবে এই উত্থাপিত বিলের আপত্তি করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। আজ মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি তিনটি বিল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন। বিলগুলো হলো- ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল- ২০২১ এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১। পরে ইন্টারমিডিয়েট বিলটি একদিনের মধ্যে এবং অন্য দুটি দুদিনের মধ্যে পরীক্ষা করে জাতীয় সংসদে প্রতিবেদন দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন বিলটি উত্থাপন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। বিলটি সংসদে উত্থাপনের আগে নোটিশ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা না পাওয়ায় আপত্তি জানান তিনি। এছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবের দেওয়া বক্তব্য নিয়েও আপত্তি জানান ফখরুল ইমাম। তিনি বলেন, ‘সংবিধানে বলা আছে গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনে নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদান। এখন পরীক্ষা তুলে দেবেন, এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে কিনা? পরীক্ষা ও পদ্ধতির কথা বলা আছে, ওঠানোর কথা নেই। এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা, সে প্রশ্নও করেন তিনি। এছাড়া কার্যপ্রণালী বিধির ৭৭ (ঙ) অনুসরণ না করার কারণে সংসদ সদস্যদের অধিকার খর্ব হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এরপর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এই বিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এইচএসসি ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবাই অপেক্ষা করছেন এবং আমাদের ফলাফল সব প্রস্তুতও আছে। কিন্তু যেহেতু আইনে পরীক্ষা গ্রহণপূর্বক ফলাফল দেবার বিষয়টি ছিল। এবার যেহেতু বৈশ্বিক সঙ্কটের কারণে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। আমরা বিকল্প একটি পদ্ধতিতে আগের দুটি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এই ফলাফল দিতে যাচ্ছি। সে কারণে বর্তমান আইনটি সংশোধন করার প্রয়োজন দেখা দেয়। সে কারণে এটি আনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিলটি মন্ত্রিপরিষদে আনার পর বলেছিলাম যেহেতু ১৮ তারিখ সংসদ শুরু হবে, তারপর দ্রুততার সঙ্গে উত্থাপনের চেষ্টা করবো। যেদিন সংসদ পাস করবে, যদি সংসদ পাস করে তারপর আমরা দ্রুততার সঙ্গে ফলাফল দেব। এটি অবশ্যই সংসদের এখতিয়ার। সংসদ কবে পাস করবে তার ওপর নিশ্চয়ই কথা বলবার এখতিয়ার নেই। সংসদের এখতিয়ারের ওপর কারো হাত দেবার সুযোগ নেই। অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাই দ্রুততার কথা এসেছে। এটি অত্যন্ত জরুরি। আমাদের বোর্ডের সমস্ত পরীক্ষা এই আইনের অধীনেই হয়। পরে বিলটি পরীক্ষার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয় এবং একদিনের মধ্যে বিলের রিপোর্ট প্রদান করতে বলা হয়েছে। বিল তিনটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিতিতে অতিমারি, মহামারি, দৈব দুর্বিপাকের কারণে বা সরকার কর্তৃক সময় নির্ধারিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ করা সম্ভব না হলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা কোনো বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ করে উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশনা জারি করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে। জবাবে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আমার অনুমতিতেই বিলটি এসেছে, এর কিছু গুরুত্ব আছে। তিনটি বিল আমাদের পাস করাতে হবে। এরপর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বিলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এইচএসসি ফলাফলের জন্য সবাই অপেক্ষা করছেন বলেও জানান তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: