রাজধানীর পূর্বাচলে মারকাযুস সুনান মাদরাসার মসজিদে মুসল্লি ও ছাত্রদের ওপর অর্তকিত হামলা চালিয়েছে সে এলাকার সন্ত্রাসীরা। সে সময় মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন মুসল্লিরা। এ সময় বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে সন্ত্রাসীরা।
গত ১৬ জানুয়ারী শনিবার মাগরিবের নামাজ আদায় করছিলেন মুসল্লিরা সে সময় একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। এ হামালায় মাদরাসার শিক্ষকসহ ছাত্ররা আহত হয়েছেন। তাদেরকে প্রার্থমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়েরে করলেও থানা পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, মাদরাসার ৩ শিক্ষক ও ৬ ছাত্র সন্ত্রীদের হামলায় আহত হয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতাল চিকিৎসা নিতে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসা শেষে তারা মাদরাসায় ফিরেছেন। যারা হামলার শিকার হয়েছেন তারা হলেন, মো.জুনাইদ(১৯),আব্দুল্লাহ(২০),ফজলে রাব্বি(১৪), শোয়াইব(১৮), জুবায়ের আহমদ(১৭) এনামুল হক(১১) বেলাল খান (৩৫) ইয়াকুব শরীফ (৩১), ওমর ফারুক।
মোস্তাকিন নামে ইসলামি আইন গবেষণা বিভাগের এক ছাত্র সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, গত শনিবার মাগরিবের নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হবার সময় হঠাৎ একদল সন্ত্রাসী আসে। বুঝে উঠার পূর্বেই আমাকে রড দিয়ে আঘাত করতে থাকে। অপরদিকে সন্ত্রাসীরা মসজিদ মাদরাসার বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। মসজিদ মারদাসা অন্ধকার হয়ে গেলে ১৫ থেকে ২০ সন্ত্রাসী এলোপ্যাথারি হামলা করতে থাকে। তাতে আমাদের ৩ শিক্ষক সহ ৬ ছাত্র আহত হয়েযেয়ছন। আমাকেসহ আহতদের চিকিৎসা জন্য রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রো নেয়া হয়েছে।
মাদরাসার মুহতামিম মুফতি শফিকুল ইসলাম আবদুল্লাহ প্রতিবেদক‘কে জানিয়েছেন,গত ১৫ জানুয়ারী শুক্রবার পূর্বাচলে নির্মাণাধীন একশো বিয়াল্লিশ তলা বহুতল ভবন এলাকায় ছাত্ররা খেলার সময় মাদানী নেসাব ১ম বর্ষের এক শিশু শিক্ষার্থী একটি পাখিকে লক্ষ্য করে ছোট্ট একটি ঢিল ছুঁড়ে মারে। অনাকাঙ্খিত ভাবে ঢিলটি নির্মাণাধীন প্রকল্পের কর্তব্যরত এক সিকিউরিটি গার্ডের শরীরে লাগে।
অনাকাঙ্খিত ভুলের জন্য শিশু শিক্ষার্থীটি গার্ডের কাছে ক্ষমা চাইলেও তিনি ক্ষমা না করে সে শিশু শিক্ষার্থীকে উপর্যুপুরি কিল, ঘুষি ও থাপ্পর মারেন। এসময় শিশুটি নিজেকে রক্ষা করতে দৌড় দিলে সিকিউরিটি গার্ড তার কোমরে লাথি মারে। শিশুটি পড়ে গিয়ে আবার দৌড়াতে শুরু করলে সে গার্ড শিশুটিকে লক্ষ্য করে ইট মারে যা শিশুটির কোমরে লেগে সে প্রচন্ড ব্যথা পায়।
অন্য একসূত্রে জানা যায়, এসময় পাশে থাকা আরো এক শিশু শিক্ষার্থীকে কোন অপরাধ ছাড়া মারধর করে তার পাঞ্জাবির কলার ছিঁড়ে দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে। অন্যান্য ছাত্ররা শিশুটিকে রক্ষা করতে এলে তাদেরকেও রড দিয়ে মারার চেষ্টা করে এবং পরবর্তীতে কোনো সময় তার সামনে দেখলে হাত পা ভেঙ্গে হত্যা করার হুমকি দিয়েছে সে গার্ড। ঘটনাটি ছাত্ররা মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে পরদিন ১৬ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে সে এলাকার অন্য রাস্তায় হাটতে গেলে মারধরের শিকার শিশু শিক্ষার্থীকে দেখে তার দিকে তেড়ে এসে গালাগাল শুরু করেছে সে গার্ড। এসময় অন্যান্য ছাত্ররা প্রতিবাদ করে মাদরাসায় ফিরে আসে।
ছাত্ররা মাঠের ঘটনা কোন শিক্ষককে না জানিয়ে মাদরাসার মসজিদে নামাজে অংশ নেন। এদিকে মাগরিবের নামায চলাকালীন সময়ে সে গার্ড মাদরাসার বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ করে ১০-১২ ব্যাক্তি লোহার রড, লাঠি সোঠা নিয়ে মসজিদ ও মাদরাসার ওপর হামলা করেছে। নামাজরত অবস্থায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন করে মসজিদ ও মাদরাসায় হামলার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করতে গেলে মাদরাসায় জি এম বি রয়েছে বলে থানায় পাল্টা অভিযোগ আনে হামলাকারীরা।
হামলাকারীদের অভিযোগের কারণে পুলিশ কারো মামলা গ্রহণ করেননি। মাদরাসায় তদন্ত করে পরবর্তীতে মামলা নেয়া হবে বলে থানা পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। মাদরাসার মুহতামিম প্রতিবেদক‘কে আরো জানান, হামলাকারীরা হামলার পর ৯৯৯ নাইনে ফোন করে মাদরাসায় অস্ত্র বানানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে। অভিযোগের ভিত্তিতে মাদরাসায় র্যাব এসে ভিন্ন চিত্র দেখতে পেয়ে চলে যান এবং মাদরাসার উপর কোনো হামলা হলে ব্যবস্থা নেয়া আশ্বাস দিয়েছেন তারা। তিনি বলেছেন,এ বিষয় আমরা রূপগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে তারা মামলা না নিয়ে অভিযোগ দিতে বলে। তদন্ত করে মামলা নেয়া হবে বলে জানান তারা। এঘটনায় ছাত্র ও শিক্ষকদের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। প্রতি মুহুর্তে আমরা আবারো হামলার আশংকায় আতঙ্কিত রয়েছি। তিনি বলেন গেটের বাহিরে মাদারাসার শিক্ষকদের স্টাফ কোয়ার্টারে মহিলা ও শিশুরা রয়েছে যাদের জীবন এখন হুমকির মূখে। এ বিষয় রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে মোবাইলে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি আমি জানি,তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাঠকের মন্তব্য: