প্রচ্ছদ / খেলা হবে / বিস্তারিত

খেলা হবে

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:০৯ এএম
কথাটা প্রথম বলেছিলেন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তার ভাষা ধার করে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের আগে এই খেলা হবে ‘শব্দবন্ধ’টি এখন রাজনীতিকদের হাতিয়ার। তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল যেমন বলছেন, খেলা হবে। তেমনই বলছেন বিজেপি’র শুভেন্দু অধিকারী। এমনকি মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত বলেছেন, হোক না একটা খেলা। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, হোক না একটা খেলা। তবে তাই হোক। খেলার বিবরণ দিয়েছেন জয়ন্ত চক্রবর্তী ধরা যাক- মাঠে দর্শক, ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল ডার্বি অমীমাংসিত নমস্কার, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন থেকে কথা বলছি। আজ মেঘমুক্ত আকাশের তলায় আইপিএল বা ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল ডার্বিতে মুখোমুখি হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গ ট্রেড মার্ক মাখা বলটি ঠিক নাইকে কিংবা অ্যাডিডাস বলের মতো সেন্টার সার্কলে বসানো। কে জিতবে ম্যাচ তৃণমূল না বিজেপি? দু’হাজার এগারো এবং ষোলোর ডার্বিতে তৃণমূল সহজেই প্রতিপক্ষদের ঘায়েল করে ম্যাচ জিতে ডার্বি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কিন্তু, এবার কি তারা হ্যাটট্রিক করতে পারবে? থার্ড ডিভিশন থেকে চ্যাম্পিয়ন হতে উঠে এসেছে বিজেপি। তারা এবার পশ্চিমবঙ্গ ট্রেড মার্কার বলে ভেল্‌কি দেখাতে চাইছে। ডার্বির আগেই তারা তৃণমূলের এক জবরদস্ত স্ট্রাইকারকে তুলে নিয়ে চমক সৃষ্টি করেছে। দু’ দলের খেলোয়াড়রা মাঠে নামছেন। এই অবকাশে দু’দলের খেলোয়াড় তালিকায় একবার চোখ বুলিয়ে নিই। তৃণমূল দলের গোলরক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভায় বিরোধীদের আক্রমণ সামলাবার ব্যাপারে তিনি চ্যাম্পিয়ন। তৃণমূল দলের চার ডিফেন্ডার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ওব্রায়েন, সুব্রত বক্সি এবং সুজিত বসু। এই চারজনের মধ্যে ফাউল করেও হোক বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের আটকানোর ব্যাপারে দক্ষ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মাঝমাঠে চারজন হলেন-ব্রাত্য বসু, সুখেন্দু শেখর রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এদের মধ্যে ছ ফুটিয়া রবীন্দ্রনাথকে রাখা হয়েছে বিজেপি দলের উপর থেকে আসা রুখবার জন্য। এমনিতেই তিনি লম্বা এবং মারকুটে খেলোয়াড় হিসেবে বিস্তর সুনাম আছে। দলের দুজন স্ট্রাইকার হলেন- অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্র। দুজনেরই মাথা ঠাণ্ডা রেখে গোল করার সুনাম আছে। মদন আবার হাসতে হাসতে বিপক্ষকে কাঁদিয়েও দিতে পারেন। দলের কোচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি দুটো ডার্বিতে দলকে জিতিয়েছেন পিকের মতো ভোকাল টনিক দিয়ে। সহকারী কোচ ভিনরাজ্য থেকে আসা প্রশান্ত কিশোর যার ডার্বিতে কোচিং করার অভিজ্ঞতার কথা ভেবে তৃণমূল তাকে নিয়ে এসেছে। অন্যদিকে বিজেপি দলটিও কম শক্তিশালী নয়। গোলকিপার হিসেবে আছেন মুকুল রায়। তার জাল লক্ষ্য করে কতো পেনাল্টি শট এসেছে, তিনি সব বাঁচিয়েছেন। চারজন ডিফেন্ডার হলেন- অর্জুন সিং, কৈলাশ বিজয়বর্গিয়, সৌমিত্র খান ও সায়ন্তন বসু। অর্জুনের সুনাম অথবা দুর্নাম আছে টাফ ডিফেন্ডার হিসেবে। বল কিংবা প্লেয়ারের পা প্রায়ই তার টার্গেট হয়। চার ডিফেন্ডার হলেন- শোভন চট্টোপাধ্যায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, শমীক ভট্টাচার্য্য ও শঙ্কুদেব পণ্ডা। বিপক্ষ দল তৃণমূলের সব কৌশল শোভনের জানা বলে মাঝমাঠে বিজেপি সুবিধা পেতে পারে। দুই ফরওয়ার্ড হলেন- দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী। দিলীপ-শুভেন্দু জুটি বাজিমাত করতে পারে বলে অনেকের অনুমান। বিজেপি দলে জায়গা পাননি বাবুল সুপ্রিয়। তিনি দিল্লির ভোটার বলে বঙ্গ বিজেপি’র দলে তার জায়গা হয়নি। দলের কোচ অমিত শাহ। বহু টুর্নামেন্টে বিজেপিকে চ্যাম্পিয়ন করলেও এই প্রথম ডার্বিতে কোচিং করাচ্ছেন। বলতে বলতে আজকের ম্যাচের রেফারি নির্বাচন কমিশন খেলা শুরুর বাঁশি বাজিয়ে দিয়েছেন। স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ। বল পাস করেছেন অভিষেক, মদন বল নিয়ে বাঁ-দিকে বাড়ালেন। বল অর্জুনের পায়ে। অর্জুনের লম্বা পাস। বল পেয়েছেন শুভেন্দু। সুব্রত বক্সি, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাটিয়ে গোল-এর কাছে। ফাউল... ফাউল। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ল্যাং মেরেছেন শুভেন্দুকে। বিজেপি’র ফ্রিকিক। বল বসিয়ে শট নিলেন শুভেন্দু। আটকে গেছে তৃণমূলের প্রাচীরে। ফিরতি আক্রমণ। অভিষেকের পায়ে বল। সামনে গোলকিপার। শট নেবেন অভিষেক। কিন্তু তার আগেই অর্জুনের লক্ষ্যভেদ। জোড়া পায়ের ট্যাকেলে ছিটকে পড়েছেন। রেফারি নির্বাচন কমিশনের বাঁশি। তৃণমূলের অনুকূলে ফ্রি-কিক। কিন্তু, মাঠের দু’দিকে বিস্তর ঝামেলা হচ্ছে, বিজেপি এবং তৃণমূল সমর্থকরা পিল পিল করে মাঠের মধ্যে নেমে পড়েছেন। রেফারি নির্বাচন কমিশন বাঁশি বাজিয়ে মাঠে কেন্দ্রীয় বাহিনী ডাকছেন। খেলা ভণ্ডুল। মাঠের মধ্যে দর্শকদের ফ্রি ফর অল। গণ্ডগোল হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন লম্বা বাঁশি দিয়ে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল ডার্বির ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়েছে। আসলে, যত ক্যাচালই হোক না কেন- শেষ বাঁশি বাজবে। যাতে একটি দল জিতবে। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: