ভূমিদস্যুদের পেটে ব্রিজের গোড়ার মাটি !

প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০২১, ১২:০২ এএম
রবিউল হোসেন রবি, চট্টগ্রাম থেকে: চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়ন গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে পড়া একটি অবহেলিত জনপদ। এ এলাকার ১০ হাজারের অধিকাংশ লোকজনের চলাচলের প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম শামশিয়াঘোনা-বটতলিশিয়া সংলগ্ন ৩ কিলোমিটারের অর্ধপাকা ও কাঁচা সড়ক। কিন্তু বর্তমানে তা জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অধিকাংশ অভ্যন্তরীণ সড়ক এখনও রয়ে গেছে কাঁচামাটির। এদিকে বটতলিশিয়া ঘোনা সংলগ্ন সড়কে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালবার্ট নির্মাণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের উদ্যোগে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলেও ব্রিজের গোড়ার মাটি গিলে খাচ্ছে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা। যার ফলে ব্রিজটির সাথে রাস্তার সংযোগ ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ব্রিজের গোড়ার মাটি কেটে নিয়ে রাস্তাটির আয়তন সরু করে ফেলা হয়েছে। যেকোনো সময় রাস্তা থেকে ব্রিজ আলাদা হয়ে যেতে পারে। ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ব্রিজের প্রবেশ মুখেই মাটি কাটার ফলে সৃষ্টি হয়েছে বড় একটি গর্ত। পুইঁছড়ির ৩ কি.মি এ সড়কটির ১ কি.মি জুড়ে ইট বসলেও তা এখন নড়েবড়ে। বাকি ২ কি.মি এখনও কাঁচা রাস্তা। রাস্তায় অস্বাভাবিক ধুলাবালির কারণে মাটির সড়কে হাঁটা খুবই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে নরক যন্ত্রণা পোহাতে হয় এই রাস্তায় চলাচলকারী পথচারীদের। এছাড়াও অতিরিক্ত ধুলাবালির কারণে স্থানীয়দের শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। স্থানীয়রা জানান, ২০০২ সালে ওই সড়কের ১ কিলোমিটার জুড়ে ইট বসানো হলেও বাকি রাস্তা আর সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এর ওপর স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ব্রিজের গোড়ার মাটি কেটে তাদের কাজে লাগাচ্ছেন। তাদের কিছু বলাও যায় না। ৪ থেকে ৫শ বসতঘরের একমাত্র ভরসা কাঁচামাটির সড়কটির উন্নয়নে এলাকাবাসীদের অভিযোগের কথা শোনেননি স্থানীয় চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিরা— এমন অভিযোগও রয়েছে স্থানীয়দের। দুঃখ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা রোটারিয়ান মুবিনুল হক মুবিন এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমাদের পুঁইছড়ি ইউনিয়ন একটি অবহেলিত জনপদ। এখনও এখানকার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক কাঁচামাটির। বর্ষায় কাঁদামাটিতে অতী কষ্টে চলাচল করে এলাকার লোকজন। গ্রীষ্মে ধূলাবালির নরক যন্ত্রণা নিয়ে পাড়ি দেয় পথ।’ তিনি বলেন, ‘সড়ক সংলগ্ন ব্রিজের গোড়া থেকে মাটি কেটে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার সংস্কৃতি খুবই দুঃখজনক। অচিরেই জনদুর্ভোগ লাঘবে সড়কের সংস্কার করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নিকট আমার আকুল দাবি রইলো।’ স্থানীয় ইউপি সদস্য শেয়ার আলী বলেন, ‘পুঁইছড়ি ইউনিয়ন এখনো পিছিয়ে পড়া জনপদের কাতারে। আমার নির্বাচনী এলাকার এ সড়কটির বেহাল অবস্থা। এ সড়কটি এখনো সংস্কারের মুখ দেখেনি। এমনিতেই সড়কের বেহাল দশা, তার উপর দিয়ে ভূমিদস্যুরা প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে মাটিবোঝাই ডেম্পার চলাচল করার কারণে ধূলাবালির রাজ্যে পরিণত করেছে সড়কটিকে। ভূমিদস্যুরা নবনির্মিত ব্রিজের গোড়া থেকে মাটি কেটে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করেছে আরো দূর্বিসহ। এলাকাবাসীর দূর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় সাংসদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’ এবিষয়ে জানতে পুইঁছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতানুল গণী চৌধুরীর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘ব্রিজের গোড়ার মাটি কেটে নেয়ার ব্যাপারে আমি অবগত নয়। আমি জানিনা এটি।’ কাঁচামাটির ওই রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: