আত্মহত্যার ২ মাস পর স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২১, ০২:৪৭ এএম
রংপুরের বদরগঞ্জে সীমা রানী নামে এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার দুই মাস পর তাকে ধর্ষণের একটি ভিডিও ফাঁস হয়েছে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ ও গোপন ভিডিও ধারণ করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ওই ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে ওই ছাত্রীকে কয়েকদফায় অনৈতিক সম্পর্কে বাধ্য করা হয়। লোক লজ্জার ভয়ে ও অপমানে আত্মহননের পথ বেছে নেয় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সীমা রানী। তবে পুলিশ বলছে, মেয়েটি রংপুর মেডিকেলে মারা যাওয়ার পর কোতোয়ালি থানায় একটি ইউডি (অস্বাভাবিক মৃত্যু) মামলা থাকলেও কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। ভিডিও ফাঁসের কথা শুনলেও তা পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সোমবার (৮ মার্চ) মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। মূল ঘরে তালা ঝুলছিল। সীমা রানীর বাবা মাখন চন্দ্র মারা গেছেন অনেক আগেই। সীমারা তিন বোন। দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। সীমা মায়ের কাছে থাকতেন। পড়তেন কাঁচাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে। গত ৫ জানুয়ারি নিজ বাড়িতে বিষপান করলে সীমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ওইদিনেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সীমার মৃত্যু হয়। এলাকাবাসীর ধারণা, হাফিজুল ইসলাম মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেইল করতে একজনকে দিয়ে ওই ভিটিওটি ধারণ করেন। পরে মেয়েটি জানতে পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। ফাঁস হওয়া ৪ মিনিটের ভিডিও ফুটেজে একটি ঘরে লোহানীপাড়া ইউপি সদস্য ইউনুস আলীর ছেলে হাফিজুর রহমানের সঙ্গে মেয়েটির অন্তরঙ্গ ভিডিওর সঙ্গে কিছু কথোপকথন শোনা যায়। ভিডিওটি দেখে বোঝা যায় একই ঘরে খাটের আড়াল থেকে ভিডিওটি মোবাইল ফোনে ধারণ করা। একসঙ্গে দুজনের কয়েকটি ছবিও প্রকাশ হয়েছে। তবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমানের বাড়ি থেকে মেয়েটির বাড়ি দুই কিলোমিটার দুরে, নয়াপাড়া গ্রামে। হাফিজুর দুইটি বিয়ে করেছিলেন। দুই স্ত্রীকেই তালাক দিয়েছেন। তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার বাবা ইউনুছ বলেন,‘আমি ইউপি নির্বাচন করবো। প্রতিপক্ষ আমাকে ও আমার পরিবারকে ঘায়েল করতে এমন কাজ করিয়েছেন।’ হাফিজুর কোথায়? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চার-পাঁচদিন ধরে সে বাড়িতে নেই।’ ওই ভিডিও সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউনুছ বলেন, ‘ওই ভিডিও বানানো হতে পারে। ওই ভিডিও দেখিয়ে আমার প্রতিপক্ষ বর্তমান মেম্বার ফজলু ও রাসেল আমার ছেলের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। তার প্রমাণ এলাকার একজনের কাছে আছে।’ ভিডিও ধারণ করা বিপুলচন্দ্রকেও বেশ কিছু দিন থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তার পরিবার জানিয়েছে, সে কোথায় আছে তা তারা জানেন না। ভিডিও ধারণের বিষয়েও কিছু জানেন না তারা। পরিবারের দাবি, বিপুলের মাথা খারাপ। বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ওই সময় থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। এখন নিহতের পরিবারের কেউ একজন অভিযোগ করলে আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা নেওয়া যাবে। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বিষয়টি জানার পর বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতাকে ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। পরিবার যাতে ভয় না পায়, সে জন্য পুলিশ নিরাপত্তা দেবে বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দিলে থানা তা গ্রহণ করবে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: