বগুড়ায় শ্রমিক সংকটে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১০:২১ পিএম
একদিকে করনোভাইরাসের কারণে অন্য জেলা থেকে শ্রমিক আসছে না আবার বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় বগুড়ার কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। জানা গেছে, করোনার থাবায় দেশজুড়ে চলছে সার্বাত্মিক লকডাউনের কারণে স্থির হয়ে পড়েছে কর্মচঞ্চল মানুষের জীবনধারা। এমন পরিস্থিতিতেও মাঠে কাজ করছেন কৃষক। ক্ষেতের নতুন ফসলে কৃষকের মুখে হাসি ফোঁটে, স্বপ্ন বুনতে থাকেন আগামীর পথ চলার। কিন্তু, করোনার চোখ-রাঙ্গানী আর আগ্রাসণে কৃষকের সেই হাঁসি মলিনতার কালো মেঘের আড়ালে ঢেকে যাবার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সুখের স্বপ্নে হানা দিয়েছে করোনার দুর্ভাবনা। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রাতদিন পরিশ্রম করে কৃষক ফসল ফলিয়েছে। কিন্তু করোনার প্রভাবে সেই ফসল এবার ঘরে তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয় ও দুশ্চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে কৃষকের। ক্ষেতে সোনালী ফসল দুলছে, কিন্তু তা ঘরে তুলতে যে শ্রমিকের প্রয়োজন তার দেখা নেই কোথাও। এরমধ্যে, শেরপুর, শাজাহানপুর, নন্দীগ্রাম, কাহালুসহ এ জেলায় শ্রমিক সংকট ও ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কায় বোরো ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। প্রতিবছর এ মৌসুমে আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার শ্রমিক এই উপজেলায় ধান কাটতে এলেও এবার করোনা আতঙ্কের কারণে শ্রমিক এখনো আসেনি। এ অবস্থায় কৃষকরা স্থানীয় শ্রমিক দিয়েই উচ্চ মূল্যে ধান কাটা শুরু করেছেন। এতে ধানের উৎপাদন ব্যয় বাড়বে বলে অভিমত কৃষকদের। ফলে ধানকাটা নিয়ে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে। নন্দীগ্রাম উপজেলার মুথরাপুর গ্রামের কৃষক বুলবুল হোসেন, ফারুক হোসেন বলেন, ‘আগে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম থেকে নন্দীগ্রামে ধান কাটার শ্রমিকরা আসতেন। এ বছর আমরা তাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু‘ ধান কাটার মৌসুম শুরু হলেও করোনা ভাইরাসের কারণে তারা আসতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়েই স্থানীয় শ্রমিক দিয়েই জমিতে ধান কাটার কাজ করছি। এতে করে আমাদের ধানকাটার ব্যয় বাড়বে।’ বামন গ্রামের কৃষক তীর্থ সলিল রুদ্র বলেন, বাইরের ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি কম। এলাকার মানুষের মজুরি বেশি তাই ধানের উৎপাদন খরচের পাল্লা ভারি হবে। এলাকায় শ্রমিক না পেলে এসব ধান শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ে জমিতেই নষ্ট হতে পারে। আবার ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া যায় তাহলে লোকসান হবে। এসব চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না। জেলা কৃষি উপপরিচালক মো: দুলাল হোসেন জানান, এ বছর জেলায় ১লক্ষ ৮৮ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। ফুলদমে ধান কাটা শুরু হলে রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম শ্রমিক আনা হবে। তবে লকডাউনের মধ্যেও অন্য স্থান থেকে পরিবহন নিয়ে শ্রমিকরা আসতে পারবো। এছাড়া ধান কাটার ক্ষেত্রে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: