নাচের স্কুল গড়ার স্বপ্ন দেখেন অদিতি

প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০২১, ০৩:২৮ এএম
অদিতি রায় চৌধুরী। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন নিয়ে অধ্যয়ন করছেন। নাচতে ভীষণ পছন্দ করেন। একটু সময় পেলেই নৃত্য শুরু করতেন। তবে সে সখ এখন স্বপ্নে দাঁড়িয়েছে। শৈশব থেকেই স্বপ্ন দেখতেন টিভির পর্দায় নাচবেন। তবে তা যে এতদ্রুত বাস্তবায়ন হবে তা তিনি ভাবেন নি। অদিতি রায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) নৃত্য শিল্পী নির্বাচন পরিক্ষা ২০২০ এ নির্বাচিত হয়েছেন। কয়েকশ জনকে হারিয়ে তিনি ৬৯তম নির্বাচিত হন। কুমিল্লা নানাদিঘী পাড় এলাকায় এক সাংস্কৃতিকমনা মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অদিতি। স্কুল জীবন শুর হয় আওয়ার লেডি অফ ফাতিমা গার্লস হাই স্কুলে। পড়ালেখার পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিলে নাচের প্রতি। স্কুলের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচ, গান ও অভিনয় প্রতিযোগিতা দিতেন। প্রায়ই পুরস্কার পেতেন। এক্ষেত্রে মায়ের উৎসাহ পেয়েছেন সবথেকে বেশি। তিনি বলেন, 'স্কুল জীবন থেকেই মা খুব উৎসাহ দিতেন নাচ শিখার জন্য। তাই মাঝে মাঝে বাসায় এবং শিক্ষকের কাছে গিয়ে নৃত্য শিখতাম। শিক্ষকও আমাকে খুবই সাহায্য করতেন।' স্কুল পেরিয়ে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। এবার কলেজ থেকে বিভিন্ন জেলা উপজেলা অনুষ্ঠানের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। কখনও ২য় স্থান আবার কখনও ৩য় স্থান লাভ করেছেন। এক পর্যায়ে জাতীয় পর্যায়েও অংশগ্রহণ করেন অদিতি। তবে এ সবটা সময় তিনি শেখার মধ্য দিয়েই পার করেছেন। কলেজ জীবন শেষ করে পা বাড়ালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। ভর্তি হলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগে। এতে নাচের সুযোগ যেন বহুগুণ বেড়ে গেল। যুক্ত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনে সাথে। বর্তমানে তিনি থিয়েটার এবং প্রতিবর্তনে কাজ করছেন। তার মতে, 'এ সংগঠনগুলো থেকেই অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।' বিটিভিতে নির্বাচিত হওয়ার প্রসঙ্গে অদিতি বলেন, 'যুক্ত হতে পেরে আমি আনন্দিত। চারপাশে মানুষের উৎসাহ পেয়ে আরও মুগ্ধ হয়েছি। হয়তো অনেকজনকে হারিয়ে দেওয়া কষ্টকর ছিল। সেখানে অনেক ভাল ভাল নৃত্য শিল্পীরা অংশ নেন। এত ভাল ভাল অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে টিকে থাকব ভাবতে পারি নি। টিকার পরও তেমন কিছু ভাবিনি, কিন্তু এখন সবার এতো এতো শুভকামনা দেখে মনে হচ্ছে অর্জনটা আসলে এতো হেলাফেলার জিনিস না। খুশি তো লাগছেই সাথে মনে হচ্ছে এটা মাত্র শুরু, এই অর্জন থেকে আরো ভালো কিছু করার শক্তি পাচ্ছি।' আমাদের দেশ সংস্কৃতি সম্পর্কে বলেন, আমাদের দেশে আসল সংস্কৃতিটা বিকৃত হয়ে যাচ্ছে। দেশের সাধারণ লোক নৃত্যগুলো যে কত সুন্দর আর আমাদের কত বড় সম্পদ সাধারণ মানুষ জানেনা। সবাই হিন্দি ও বিদেশী গানের নাচ দেখেই খুশি। তাই আমি একটা জিনিস চাই, যদি ভালো কিছু নাচ নিয়ে কাজ করতে পারি তবে অবশ্যই দেশীয় নৃত্য গুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। এ সাফল্যকে তিনি স্বপ্নের প্রথম ধাপ হিসেবেই দেখছেন। লক্ষ রয়েছে অনেকদূর যাবার। এখন স্বপ্ন দেখেন, একটা নাচের স্কুল প্রতিষ্ঠা করার। যেখানে তিনি অভিনয়, গান ও নাচ শেখাবেন। নাচকে ভালবাসবেন, নাচতে ভালবাসবেন। জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত নাচের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে চান অদিতি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: