বশেমুরবিপ্রবিতে প্রক্টরের বিরুদ্ধে ১৭ সহকারী প্রক্টরের অনাস্থা

প্রকাশিত: ০৮ মে ২০২১, ০৪:২৬ এএম
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) প্রক্টর ড. রাজিউর রহমানের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ১৭ জন সহকারী প্রক্টর। গতকাল (বৃহস্পতিবার) তারা উপাচার্য বরাবর এ অভিযোগপত্রটি জমা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে উপাচার্য প্রফেসর ড.এ.কিউ.এম. মাহবুব তিনি বলেন, “গতকাল অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরে এ বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, রুটিন উপাচার্যের মেয়াদকালে নিয়োগকৃত প্রক্টর ড. রাজিউর রহমানসহ সকল সহকারী প্রক্টরের পদ অবৈধ এবং সাবেক উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মোঃ শাহাজাহান তার ক্ষমতার বাহিরে নিয়োগ দিয়েছেন। প্রক্টরের প্রতি অনাস্থার কারণ জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর মাহবুব আলম বলেন, “ড.রাজিউর রহমান প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর দুএকটা বিষয়ে আমাদের ডাকলেও পরবর্তীতে কোনো বিষয়ে আমাদের সাথে সমন্বয় করেননি। বিশেষ করে আমি কাজ করার সুযোগ পাইনি। একারণে আমি নতুন উপাচার্য যোগদানের পরপরই অনাস্থা জানিয়েছিলাম। এছাড়া তার নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ। আর এর কারণ হলো রুটিন দায়িত্ব পালনকালে এধরনের নিয়োগ দেয়া যায় কিনা সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাছাড়া এতজন সহকারী প্রক্টর থাকায় সহকারী প্রক্টরদের মাঝে সিনিয়র কাউকে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দিতে পারতো।” এ বিষয়ে ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর এবং প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে ড.মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পরিপন্থী নয় এবং আইন অনুযায়ী উপাচার্য নিয়োগ দিতে পারে এমন যেকোনো পদ শূন্য হলে রুটিন দায়িত্ব পালনকারী উপাচার্য ওই পদে নিয়োগ প্রদান করতে পারবেন।” অপরদিকে ড. দিল আফরোজা বেগম বিষয়টি নিয়ে ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামানের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, “কোনো পদ শূন্য হলে রুটিন দায়িত্ব পালনকারী উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে নেয়ার জন্য কাউকে নিয়োগ প্রদান করতে পারেন। তবে তিনি কাউকে পূর্ণ মেয়াদের জন্য স্থায়ী নিয়োগ দিতে পারবেন না। এক্ষেত্রে রুটিন উপাচার্যের নিয়োগকৃত ব্যক্তি যদি সঠিকভাবে তার দায়িত্ব পালন করে তাহলে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ভিসি ওই ব্যক্তির নিয়োগকে স্থায়ী করতে পারেন।” বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সরকার আলী আক্কাস বলেন, “রুটিন উপাচার্য শূন্য পদে কাউকে নিয়োগ প্রদান করলে সেই নিয়োগের ধরন অস্থায়ী হয়। তবে নতুন উপাচার্য যদি দায়িত্ব গ্রহণের পর সেই নিয়োগকে বাতিল না করেন তাহলে সেই নিয়োগ নিয়ে আর প্রশ্নের সুযোগ নেই এবং পূর্বের নিয়োগকে বৈধ হিসেবে ধরে নেয়া যায়। এছাড়া প্রক্টর নিয়োগের ক্ষেত্রে সহকারী প্রক্টরদের মধ্য থেকেই কাউকে নির্বাচনের বাধ্য বাধকতা নেই এবং একজন প্রক্টর তার কাজের জন্য উপাচার্যের নিকট দায়বদ্ধ থাকেন, এক্ষেত্রে সহকারী প্রক্টরদের অনাস্থা জানানোরও সু্যোগ নেই।” এদিকে, বশেমুরবিপ্রবি আইন ২০০১ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নিয়োগের বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয় নি। এছাড়া ড. রাজিউর রহমানের নিয়োগপত্রে দেখা গেছে, তাকে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হলেও কোনো সময়সীমা উল্লেখ না করে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রক্টর ড. রাজিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে এখনও অফিসিয়ালি অবগত নন বলে জানান। অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে সাবেক উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মোঃ শাহাজাহান বলেন, “আমি দায়িত্ব পালনকালে নিয়ম বহির্ভূত কোনো কাজ করি নি। প্রক্টর পদ শূন্য হয়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ একজন শিক্ষককে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছিলাম।” প্রসঙ্গত, সাবেক প্রক্টর আশিকুজ্জামান ভুইঁয়া ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করায় ২০১৯ এর ১০ অক্টোবর আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রাজিউর রহমানকে প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: