গণমাধ্যম অন্ধকার থেকে মুক্তি পাবে

প্রকাশিত: ২০ মে ২০২১, ১২:১২ এএম
আমলাতন্ত্র হচ্ছে গলায় হাত রেখে আদর করা এমন এক ছদ্মবেশী দানব যে, তার বিরুদ্ধে গেলেই গলায় চেপে ধরে। সাধু-অসাধু তখন এক ঘাটেই পানি খায়, গলাগলি ধরে টিকে থাকে। এজন্যই তারা রাষ্ট্র কাঠামোতে ভয়াবহ রকমের গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী। সরকার সবসময়ই আমলাদের কাছে জিম্মি থাকে। কারণ মাঠ প্রশাসন তারাই চালায়। তবুও বিজ্ঞ রাজনৈতিকরা মানতেন তাদের টাইটে না রাখলেই বিপত্তি। জানতেন টাইটে রাখার কৌশল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বিষয়টা লাগামছাড়া। অসাধু সরকারী চাকুরে আর অসাধু আমলা নামের দানবদের সকল অপকর্ম খামচি দিয়ে কেড়ে নিয়েছে এই সরকারের কিছু মাথামোটা মস্তিষ্কহীন আবাল আইন প্রণেতা। এজন্য ভয় হয় শেখ হাসিনা একা লড়াই করে পারবেন কী? চারপাশে এতো এতো সরকার দলীয় কিন্তু কিছুদিন আগে হেফাজতের তাণ্ডবের সময় ফেসবুকে পোষ্ট করার লোক পাওয়া যায়নি! অথচ অবসর প্রাপ্ত চাকুরে, ব্যবসায়ী, অপরিপক্ব রাজনৈতিকের প্রশ্রয়ে সরকারি চাকুরেরা এতো বেশি সরকার দলীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের রোল প্লে করে যেন বৃটিশ আমল থেকে তারা আওয়ামী লীগ করে! যেন একেকজন তৃণমূল থেকে উঠে আসা কোন ত্যাগী নেতা! অনিয়মের নিউজ ও সত্য বললেই হম্বিতম্বি শুরু করে- দল আর দ্যাশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়ে গেল! আর আছে কিছু অমেরুদণ্ডী বিরোধী প্রাণী। সাংবাদিকদের ভেলা বানিয়ে ক্ষমতার স্বাদ পেতে চায়। যেন দ্যাশের এহেন কর্মকাণ্ড আর তাদের মেরুদণ্ড খসে পড়ার জন্য সাংবাদিকরাই দায়ী! কিন্তু তাদের কোনদিন প্রকাশ্যে বলতে দেখলামনা ক্ষমতা পাইলে যত কালা কানুন আছে তারা বাতিল করবে। গণমাধ্যমের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা দিবে। সকল মতের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিবে। গণমাধ্যমে অদৃশ্য দাঁড়ালো কাঁচি ঝুলিয়ে রাখবে না। কোন গণমাধ্যমকর্মী ও গণমাধ্যমকে অন্যায়ভাবে হয়রানী ও নির্যাতন করবে না। গণমাধ্যমকে নিজের আয়ে মাথা উঁচু করে মেরুদণ্ড সোজা করে চলার পথ তৈরি করে দিবে। আর হলো সাধারণ মানুষ। দোষ দেই না। হুজুগে তো তাই খালি হাড়িতে চাল-পানি না দিয়েই পোলাও কুমড়া খেতে চায়। কিন্তু বাঘকে ফাঁকি দিয়ে বন থেকে লাকড়ি আনা কত যে কষ্ট, কতোখানি জীবন বাজি রাখা লাগে তাই চিন্তা করে না। এইগুলা রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব না। দিনকে দিন অবস্থা খারাপ হচ্ছে, আরও হবে। শুধু বাংলাদেশে না, গুটি কয়েক দেশ বাদে সারা বিশ্বেই গণমাধ্যমকর্মী ও গণমাধ্যমের শক্তভাবে গলা চিপে ধরা হচ্ছে। যখন যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা আগের জনের থেকে আরো বেশি শক্ত করে গলা চিপে ধরে যাতে দম নেবার সুযোগ না পায়। আর এই প্রক্রিয়া চলতেই থাকবে। যতোদিন না গণমাধ্যমের একেবারে মৃত্যু না ঘটে। গণমাধ্যমেও ভেদাভেদ, বৈষম্য, দলাদলিও কম নয়। বলতে গেলে বেশিই। এর মধ্যে সব থেকে অবহেলিত হচ্ছে মফস্বল সাংবাদিকতা। মফস্বল সাংবাদিকদের লড়াইটা কতোটা বৈরি কেবল তারাই তা জানেন! আজ রোজিনার আপার এই ঘটনায় সাংবাদিক নেতা বলতে আমরা যাদের চিনি তারা ভূমিকা রাখতে পারেনি বা রাখেননি। আমার মতে এটা একটা ভালো দিক। আমার কাছে এই লড়াইটা তাই রোজিনা আপার লড়াই বলে মনে হচ্ছে না, মানছি না। এই লড়াই সকল পক্ষের শৃঙ্খল থেকে গণমাধ্যমের প্রকৃত মুক্তির লড়াই। এজন্য আশা জাগছে। নতুন প্রজন্মের বিবেকবানরা হয়তো সারাদেশের মফস্বলের কর্মীদের এই পাশে থেকে লড়াই করার অবদান ভুলে যাবেন না। তারাও মফস্বলের প্রকৃত সংবাদকর্মীদের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াবেন। তাদের জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের মুক্তির পথের কথা বলবেন। আশা করতেই পারি সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গণমাধ্যম সত্যিকারের আলোর দেখা পাবে। গণমাধ্যম অন্ধকার থেকে মুক্তি পাবে। সোহেল তালুকদার,গণমাধ্যমকর্মী, টাঙ্গাইল।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: