নওগাঁয় পত্নীতলায় আক্রান্ত বেড়ে ২৭ মৃত্যু ৩

প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২১, ১০:৩২ পিএম
নওগাঁর পত্নীতলায় করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সংক্রমণ বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি মানছে না অত্রাঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি দিন দিনই বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসনের অভিযান চলমান থাকলেও উপজেলা সদর নজিপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার বঙ্গবাজার, বাসস্ট্যান্ড এলাকার বিভিন্ন কাপড়ের দোকান, মনোহারী দোকান, হোটেল রেস্তোরা, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নতুনহাট সহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও চটপটি, ফুচকা, সিংগাড়া এবং চায়ের দোকান গুলোতে এখনও গাদাগাদি করে বেচা-কেনা করতে দেখা গেছে। পরিস্থিতি এমন যে, এসব এলাকায় নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে উপজেলার নজিপুর ইউপির যদুবাটি এলাকার মৃত আঃ কাইয়ুমের ছেলে করোনা পজিটিভ জনৈক আব্দুল গফুর (৬৫) নামের একজন রোগী মৃত্যু বরন করেছেন। সোমবার দিবাগত রাত আনুঃ আড়াইটায় যদুবাটি এলাকার নিজ বাড়িতে শ্বাস কষ্ট হয়ে তার মৃত্যু হয়। তার স্ত্রী আফরোজা (৫০)ও গুরুত্বর অসুস্থ বলে জানাগেছে। উপজেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মোট ৩জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত রয়েছে ২৭জন। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ খালিদ সাইফুল্লাহ জানান, আব্দুল গফুর গত ৩১ মে/২০২১ সোমবার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিলে ৩জুন বৃহস্পতিবার তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এ অবস্থায় রবিবার রাতে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে নিজ বাড়িতেই তার মৃত্যু হয়। সোমবার সকালে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহযোগীতায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আব্দুল গফুরের পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে উপজেলায় ২৭জন করোনা পজিটিভ রোগী রয়েছে। তারা সবাই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। উপজেলায় এ পর্যন্ত ৩জনের মৃত্যু হয়েছে। সমপ্রতি নজিপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার বিভিন্ন কাপড়ের দোকান, বঙ্গবাজার, মনোহারী দোকান, হোটেল রেস্তোরা, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পুরাতন বাজার হাট, নতুনহাট, চকনিরখীন মোড়, মামুদপুর মোড়, মধইল বাজার, শিবপুরহাট বাজার সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজি, মাছ, মুদি, পান, সুপারি, ফল, দই, মিষ্টি, চটপটি, ফুচকা, সিংগাড়া এবং চায়ের দোকানের বিক্রেতাসহ অধিকাংশ দোকানি মাস্ক ছাড়া পণ্য বিক্রয় করছেন। একইসঙ্গে মাস্ক ছাড়াই কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। মানছেন না নিরাপদ শারীরিক দূরত্বও। পাশাপাশি বেশিরভাগ ক্রেতা ও বিক্রেতাকে মাস্ক ছাড়াই বেচা কেনা করতে দেখা গেছে। ক্রেতাদের কারো কারো মুখে মাস্ক থাকলেও বিক্রেতাদের বেশির ভাগের মুখে মাস্ক নেই। অনেকে আবার মুখে মাস্ক পরলেও সেটি আবার কারো কারো ঝুলছে থুঁতনিতে আর কানের ধারে। করোনা ঠেকাতে শুধু মাস্ক পরাই যথেষ্ট নয়, মানতে হবে সামাজিক দূরত্বের বিধিও। অপরদিকে গণ পরিবহনে একটি সিটে একজন বসার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ব্যাটারি চালিত চার্জার, সিএনজি গাড়ি গুলোতে ৬/৭জন করে বসানো হচ্ছে, ভ্যান রিক্সা গুলোতেও একই অবস্থা। আর মসজিদ গুলোতেও কোন স্বাস্থ্য বিধির বালাই নেই। এদিকে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগের করোনা পরীক্ষা আরো বাড়ানো সহ প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর আহ্বানা জানিয়ে এলাকাবাসী জানান, আমের মৌশুম হওয়ায় জেলার সাপাহার, পোরশা সহ অত্রাঞ্চলে আম কিনতে আসা বাহিরের ট্রাক ও মানুষের সমাগম দিনদিনই বেড়ে যাওয়ায় করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। অত্রাঞ্চলের মানুষকে স্বাস্থ্যবধি মানাতে এখনই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে করোনা আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ লিটন সরকার জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার গুলোতে ও জনসমাগম এলাকা গুলোতে সচেতনতা মূলক মাইকিং ও অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: