স্বপ্ন দেখার নিয়ে নতুন ব্যাখ্যা দিলেন বিজ্ঞানীরা

প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২১, ১২:১৮ এএম
মানুষের স্বভাব হলো ঘুমের ঘরে নানান স্বপ্ন দেখা। আবার তা অতিপ্রিয়দের কাছে বলা। মানুষ স্বপ্নে যা দেখে তা আসলে তাদের জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনারই প্রকাশ। শুধু তাই নয়, স্বপ্নে ভবিষ্যতের ঘটনাগুলোও মানুষ প্রত্যাশা করে।– এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের জার্নাল স্লিপের গবেষণায়। নতুন এই গবেষণায় জানা গেছে, রাতে মানুষের দেখা ৫৩.৫ শতাংশ স্বপ্ন কোনো একটি স্মৃতির সঙ্গে জড়িত এবং প্রায় ৫০ শতাংশ স্বপ্ন একাধিক স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, ২৫.৭ শতাংশ স্বপ্ন আসন্ন নির্দিষ্ট ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং ৩৭.৪ শতাংশ স্বপ্ন অতীতের এক বা একাধিক নির্দিষ্ট স্মৃতির ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত।ভবিষ্যতে ঘটতে পারে এমন স্বপ্নগুলো শেষ রাতের দিকেই মানুষ বেশি দেখে। এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত যুক্তরাষ্ট্রের ফুরম্যান ইউনিভার্সিটির স্নায়ুবিজ্ঞান প্রোগ্রাম এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইরিন ওয়ামস্লে বলেন, ‘স্বপ্নের অর্থ জানার জন্য মানুষ হাজার বছর ধরে চেষ্টা করে আসছে। আমাদের গবেষণা নতুন প্রমাণ তুলে ধরেছে যে, স্বপ্ন আসলে স্মৃতি প্রক্রিয়াজাতকরণ কাজকে প্রতিফলিত করে। যদিও বহু আগেই এটা জানা গেছে যে, মানুষের রাতের স্বপ্ন অতীতের অভিজ্ঞতাকে অন্তর্ভুক্ত করে। তবে আমাদের গবেষণার তথ্য আরো বলছে, স্বপ্ন ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ঘটনাগুলোও দেখায়।’ এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ৪৮ জন শিক্ষার্থী গবেষণাগারে ঘুমিয়েছিলেন এবং গবেষকরা পলিসম্নোগ্রাফির মাধ্যমে তাদের ঘুমের মূল্যায়ন করেছেন। অংশগ্রহণকারীদেরকে রাতে ঘুম শুরুর সময়, আরইএম ঘুম এবং নন-আরইএম ঘুমের পর্যায়ে ১৩ বার পর্যন্ত ঘুম ভাঙিয়ে তাদের দেখা স্বপ্ন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। পরের দিন সকালে অংশগ্রহণকারীরা তাদের দেখা প্রতিটি স্বপ্নের উৎস হিসেবে বাস্তব জীবনের ঘটনা শনাক্ত করেছিলেন, সেসব ঘটনা আগের দিনের সন্ধ্যাতেই তারা গবেষকদের জানিয়েছিলেন। গবেষণায় মোট ৪৮১টি স্বপ্ন বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ড. ইরিন ওয়ামস্লে বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় রাতের স্বপ্নের সম্পূর্ণ নতুন একটি ব্যাখ্যা জানা গেছে। জীবনের ঘটে যাওয়া নানা ঘটনাগুলো থেকেই রাতের স্বপ্ন তৈরি হয় এবং অতীতের অভিজ্ঞতাগুলো ব্যবহার করেই স্বপ্নে ভবিষ্যতের ঘটনা দেখার একটি অভিনব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’ উল্লেখ্য, সম্ভবত স্বপ্ন হচ্ছে মস্তিষ্কে সংগৃহীত তথ্যের পুনর্গঠন বা একত্রকরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। যেসব তথ্য সবচেয়ে জটিল কাঠামোর, সেগুলো পুনর্গঠনের প্রয়োজন পড়ে সবচেয়ে বেশি। এ কারণেই হয়তো দৃশ্য, স্থান, শব্দ (ভাষা), বাস্তব জ্ঞান, ঘটনা, তাৎপর্য এবং মানবিক সম্পর্কগুলোই ঘুরে ফিরে আসে স্বপ্নের মধ্যে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: