ঢাকাই ছবির আলোচিত নায়িকা পরীমণি তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে পরীমণি বলেন, ‘ভাই, আমি বিপদে আছি। সামনা-সামনি সব বলব। আপনারা আসেন, আমাকে বাঁচান। আমি এর বিচার চাই।’
পরীমণি কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, ‘যা বলেছি (স্ট্যাটাসে), সত্য বলেছি। আমি নায়িকা বলে কী এমন ঘটনা স্বাভাবিক? আমি এর বিচার চাই। গত ১০ জুন থেকে আমি ট্রমার মধ্যে আছি। অনেক চেষ্টা করেছি ভুলতে, বিচার পাওয়ার জন্যও চেষ্টা করেছি। কিন্তু সব জায়গায় নীরবতা। বিচারের আশ্বাস পাইনি কোথাও। তাই বাধ্য হয়েই স্ট্যাটাস দিয়েছি।’
কে বা কারা এবং কোথায় এ ঘটনা ঘটেছে, এ প্রশ্নের জবাবে পরিমণী বলেন, ‘এখন যদি নাম বলি, হয় তো নিউজ হবে। কিন্তু আমার জীবনের নিরাপত্তার কী হবে। এ কথাটা ভাবুন একবার। যাদের কাছে নাম বলার গত চারদিন ধরে সেটা তো আমি বলেছি। তবে আমার শেষ ভরসা মিডিয়াই।’
তিনি এও বলেন, ‘যদি কোনো ফলাফল না পাই, তাহলে আমি মিডিয়াকে অন রেকর্ড সব বলব দ্রুত সময়ের মধ্যে। এর বিচার চাইবই আমি।’
এ বিষয়ে পরীমণির সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন গণমাধ্যম কর্মীরা। গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, তার স্ট্যাটাসটি সত্য। অনেক ভেবেচিন্তেই এই স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তার সঙ্গে অনেক খারাপ কিছু ঘটেছে যে স্ট্যাটাস দিতে বাধ্য হয়েছেন।
কিন্তু স্ট্যাটাসে অভিযুক্তের নাম লেখেননি, কে বা কারা তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেছে? সেই প্রশ্নের জবাবে পরীমনি বলেন, ‘এটা আমি অবশ্যই বলব। তবে ফোনে বলা যাবে না। আপনারা সাংবাদিকরা আসেন। আমি সবার সামনে, ক্যামেরার সামনে বলতে চাই। আমি সবাইকে জানাতে চাই। আমার ভরসা নষ্ট হয়ে গেছে। আমি কাউকে ভরসা করতে পারি না ভাই। আজ রাতে আমার যদি কিছু হয়ে যায় তার দায়িত্ব কে নেবে? আমি এজন্য ফোনে কিছু বলব না।’
স্ট্যাটাসে পরীমণি জানিয়েছেন, গত চার দিন ধরে বিচার চেয়ে মানুষের কাছে সাহায্যের প্রার্থনা করেছেন। কিন্তু সব জেনেও সবাই মুখে কুলুপ এঁটেছে।
তাই উপায় না পেয়ে মেয়ে হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আশ্রয় চেয়েছেন।
এ বিষয়ে হালের জনপ্রিয় এই নায়িকা বলেন, ‘আমি অনেক দৌড়াদৌড়ি করেছি। থানা, শিল্পী সমিতি, সবখানে গেছি। কিছুই হয়নি। আপনাদের বলতে চাই। আপনারা আসেন’
এর আগে ফেসবুকে দেওয়া ওই স্ট্যাটাসে পরীমনি লেখেন, ‘বরাবর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’
‘এই বিচার কই চাইবো আমি? কোথায় চাইবো? কে করবে সঠিক বিচার? আমি খুঁজে পাইনি চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্র বন্ধু বেনজীর আহমেদ আইজিপি স্যার! আমি কাউকে পাই না মা। যাদের পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনার বিস্তারিত জেনে, দেখছি বলে চুপ হয়ে যায়!’
পরীমণি আরও লেখেন, ‘আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কী বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মতো (যাদের অনেক নাম এক্ষুণি মনে পড়ে গেল) তাদের মতো আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো। আফসোস ছাড়া কারোর কি করার থাকবে তখন! আমি তাদের মতো চুপ কি করে থাকতে পারি মা? আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোনো অন্যায় মেনে নিতে!’
‘আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহূর্ত মাকে খুব দরকার এখন, মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে, ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্য দরকার। আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে দরকার মা। মা আমি বাচঁতে চাই। আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।’
পাঠকের মন্তব্য: