মুক্তিযোদ্ধারা জানে না তাদের স্মৃতি সৌধ কোথায়

প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২১, ০৬:২২ এএম
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সিধলা ইউনিয়নে তাত্রাকান্দা গ্রামে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি সৌধ মেমোরিয়াল নির্মাণের খবর জানে না স্থানীয়ভাবে প্রতিনিধিত্বকারী বীর মুক্তিযোদ্ধারা। গত শনিবার দুপুরে উদ্বোধন করা হয়েছে নব নির্মিত এ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধ মেমোরিয়াল। উদ্বোধনের বিষয়ে অবগত নন স্থানীয় অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম কর্মীরা। উদ্বোধনের পর এ স্মৃতি সৌধের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হলে ঘটনাটি সকলের নজরে আসলে সচেতন মহলে এ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এদিকে উল্লেখিত স্থানটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক স্মৃতি বিজরিত না হওয়া সত্ত্বেও সেখানে কেন কার স্বার্থে এ স্মৃতিসৌধ নির্মিত হল, কার কাছে এটি হস্তান্তর করা হল, কে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করবে তা সকলের অজানা। এক্ষেত্রে সরকারের ৩৩ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে এ মহৎ প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংশ্লিষ্ট দপ্তর এলজিইডির লুকোচুরির ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বর্তমানে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধিত্বকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুর রহিম জানান, এ স্মৃতি সৌধ নির্মাণের বিষয়ে তিনি অবগত নন। শনিবার বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হলে তিনি ঘটনাটি জানতে পারেন। তিনি বলেন, উল্লেখিত তাত্রাকান্দা এলাকাটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেনি। সেখানে কেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সৌধ স্থাপন করা হল বিষয়টি বোধগম্য নয় বলে জানান তিনি। আরও কয়েকজন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, এ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ বিষয়ে তাদেরকে কেউ অবগত করেনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী হাসান মারুফ বলেন, ‘এ স্মৃতিসৌধ নির্মাণের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী জানেন। আপনারা উনার কাছ থেকে তথ্য নেন।’ উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহ মোঃ ওয়াহেদুল হক জানান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক স্মৃতি সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৩ লাখ ২১ হাজার টাকা ব্যয়ে এ স্মৃতি সৌধ নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। উদ্বোধনের পর এটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। স্মৃতি সৌধ নির্মাণের স্থানটি কি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এলাকা কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থানীয় একজন ব্যক্তির দান করা জমিতে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্মৃতি সৌধ নির্মাণ বিষয়ে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম কর্মীকে অবগত করা হয়নি কেন, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন তাঁদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করবেন তিনি। স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকজন সন্তান জানান, উল্লেখিত স্থানে এ স্মৃতি সৌধ নিমার্ণে প্রশাসনের লুকোচুরির ঘটনার পেছনে রহস্য কি ? বিষয়টি তাদের বোধগম্য নয়। এ ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি করেন তারা।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: