অমির অফিস থেকে যা উদ্ধার করল পুলিশ

প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২১, ১০:৫০ পিএম
ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি তুহিন সিদ্দিকী অমির দক্ষিণখানে রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসে অভিযান চালিয়ে ১০২টি পাসপোর্ট উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেখান থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বুধবার (১৬ জুন) অমিসহ ২ কর্মচারীর বিরুদ্ধে পাসপোর্ট অপরাধ আইনে মামলা করে সাভার থানা পুলিশ। মামলায় অমিসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি দুজন অমির অফিসের কর্মচারী বাছির ও মশিউর। পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রাজধানীর দক্ষিণখানের সিঙ্গাপুর ট্রেনিং সেন্টার নামের অমির একটি রিক্রুটিং এজেন্সিতে অভিযান চালানো হয়। এখান থেকে ১০২টি পাসপোর্ট জব্দ এবং দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- বাছির ও মশিউর। এ ছাড়া উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় আরেকটি ট্রাভেল এজেন্সিতে অভিযান চালায় পুলিশ। এখান থেকে কিছু পাওয়া যায়নি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্য একাধিক সূত্র জানায়, ক্লাব পাড়ায় অমিও একজন পরিচিত মুখ। তার বাবা তোফাজ্জল হোসেন একজন নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন। অনেক বছর ধরে মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুরে তিনি কাজ করে ঢাকার আশে পাশে জমি ক্রয় করেন। বর্তমানে তার অঢেল সম্পদ রয়েছে। একমাত্র সন্তান হওয়ায় এর উত্তরাধিকারী অমি। অমি ৭/৮ বছর আগে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক হন। এরপর দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানি করেন। এ সুযোগে আদম পাচার করে প্রচুর অর্থ আয় করেন। এই অর্থের দাপটে অমি নানা অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়েন। ঢাকার উত্তরা ও আশকোনায় তাদের একাধিক বাড়ি ও প্লট রয়েছে। দক্ষিণখানে রয়েছে তার বালাখানা। এলাকায় এক নামে তাকে সবাই চেনে। আশকোনায় তাদের সিঙ্গাপুর ট্রেনিং সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। সূত্র আরও জানায়, শতশত কর্মী বিদেশে পাঠিয়ে ও প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হন অমি। বিদেশে কর্মী পাঠানোর সূত্র ধরে সাবেক এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সঙ্গে অমির পরিবারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তাদের আলিশান একাধিক বাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুলও। অমির গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। সেখানে অনেক সম্পদ গড়েছেন। মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমও গড়েছেন বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে। এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার দাবি করেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। এরপর রাত সাড়ে ১০টায় তার বনানীর বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত জানান তিনি। পরীমণির ভাষ্য, ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুটি গাড়িতে করে উত্তরার উদ্দেশে বের হন তারা। পথে অমি দুই মিনিটের কাজের কথা বলে তাদের বোট ক্লাবে নিয়ে যান। এ সময় পরীমণির সঙ্গে তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমিও ছিলেন। ক্লাবের ভেতরে পরীমণিকে নির্যাতন করার সময় প্রতিবাদ করতে গিয়ে জিমিও হামলার শিকার হন। কিন্তু অমি তার পরিচিত হওয়া সত্ত্বেও তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। মুলত অমি ষড়যন্ত্র করেই এই অভিনয় শিল্পীকে বোটক্লাবে নিয়ে যান। এই জিমির মাধ্যমে বছর দুয়েক আগে অমির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল পরীমণির। অমি এরকম বহুক্লাবের সাথে জড়িত। ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ১৪ জুন নাসির ইউ মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে মামলা করেন পরীমণি। এ ছাড়া রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে অমিসহ পাঁচজনকে আসামি করে আরেকটি মামলা হয় মঙ্গলবার। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন নাসির উদ্দিন, নাজমা আমিন বৃষ্টি, লিপি আক্তার ও সুমি আক্তার। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্য একাধিক সূত্র জানায়, ক্লাব পাড়ায় অমিও একজন পরিচিত মুখ। তার বাবা তোফাজ্জল হোসেন একজন নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন। অনেক বছর ধরে মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুরে তিনি কাজ করে ঢাকার আশে পাশে জমি ক্রয় করেন। বর্তমানে তার অঢেল সম্পদ রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: