লকডাউনে কঠোর অবস্থানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পুলিশ

প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২১, ০১:০৮ এএম
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় ঢাকার চারপাশের মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ সাত জেলায় কঠোর লকডাউন (বিধিনিষেধ) শুরু হয়েছে। রাজবাড়ী, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জও আছে এই লকডাউনের আওতায়। ফলে সারাদেশ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। আজ মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল ৬টা থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত এই লকডাউন বহাল থাকবে। এদিকে লকডাউনে মহাসড়কে কঠোর অবস্থানে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের হাইওয়ে পুলিশ। কোন ধরনের যাত্রীবাহী কিংবা অন্য গণপরিবহন, প্রাইভেটকার কিংবা যানবাহনকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না। প্রথম দিন সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে শতাধিক যানবাহন ফিরিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল থেকে মহাসড়কের সাতটি পুলিশের তল্লাশি চৌকি ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, মদনপুর, রূপগঞ্জের তারাব, সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল, সোনারগাঁয়ের মেঘনা, আড়াইহাজারের পুরিন্দা ও রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইলে এ তল্লাশি চৌকি স্থাপন করা হয়। মহাসড়কের তল্লাশি চৌকিগুলোতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোন ধরনের যানবাহন (জরুরি সেবা ব্যতিত) নারায়ণগঞ্জ ঢাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। যে যে স্থান থেকে পরিবহনগুলো এসেছে সে স্থানেই তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে চলাচল করতে চাইলেই তা দেয়া হয়নি। কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, নারায়ণগঞ্জে সাতটি তল্লাশি চৌকি স্থাপন করা হয়েছে। লকডাউন না মানার কোনো সুযোগ নেই। জীবনকে আগে গুরুত্ব দিয়ে সরকারি নির্দেশনা পুরোপুরি পালন করতে হবে। এর আগে আজ (২২ জুন) করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে দেশের সাত জেলায় কঠোর লকডাউন জারি করা হয়েছে। আজ সকাল ৬ টা থেকে এই কঠোর লকডাউন কার্যকর করা হয়। আগামী ৩০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। লকডাউন চলাকালে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে। আজ সোমবার (২১ জুন) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জরুরি ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মঙ্গলবার (২২ জুন) সকাল ৬টা থেকে ৩০ জুন (বুধবার) রাত ১২টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলায় এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। লকডাউন চলাকালে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে। বিধিনিষেধের সময় এই সাত জেলায় কী কী বন্ধ থাকবে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবকিছু বন্ধ থাকবে। মানুষও যাতায়াত করতে পারবে না। মালবাহী ট্রাক এবং অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কিছু চলবে না। সাত জেলায় সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বলেই তো দিয়েছি সব বন্ধ, শুধু কয়েকটা সার্ভিস ছাড়া। জেলাগুলো ব্লকড থাকবে, কেউ ঢুকতে পারবে না। আনোয়ারুল ইসলাম জানান, লকডাউন চলাকালে সার্বিক কার্যাবলি চলাচল (জনসাধারণের চলাচলসহ) সকাল ৬টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ সময়ে শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন-কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহণ, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (নদীবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এবং পণ্যবাহী ট্রাক/লরি এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে। করোনা পরিস্থিতি বিস্তাররোধে দেশে চলমান বিধি-নিষেধের মেয়াদ আরো এক মাস বাড়িয়ে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। গত ১৬ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে এ বিধি-নিষেধ কার্যকর করা হয়। এছাড়াও করোনার সংক্রমণ রোধে সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়। যাদের মধ্যে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় লকডাউন আগে থেকেই চলছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: