কুবিতে পাঁচ তলা হল থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২১, ১১:১৮ পিএম
ফের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সংস্কার কাজ করতে গিয়ে পাঁচতলা থেকে পড়ে মো. ফারুক (৩০) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। চিকিৎসাকেন্দ্রের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। রবিবার (২৭ জুন) বেলা ১১ টায় হলের সংস্কারের রঙের কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শ্রমিকের বাড়ি কুমিল্লা দক্ষিণ বাগমারার পিরোজপুর গ্রামে তার বাবার নাম মো. মোস্তফা। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দত্ত হলের ৫ম তলায় রঙের কাজ করার জন্য দেওয়াল পরিস্কার করছিলেন ফারুক। এসময় একটি বাঁশে ঝুলে তিনি এ কাজ করছিলেন। তবে এত উচুতে কাজ করার জন্য কোন ধরনের সেফটি গার্ড ছিল না। এতে কাজ করার সময় হাত পিছলে নিচে পড়ে যান। পরে তার পায়ের হাড় ভেঙে বের যায় এবং মাথায় আঘাত পেলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ বিষয়ে কাজের ঠিকাদার সুরিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজল খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'তারা তো এইসব কাজে পারদর্শী। সে জন্য তাদের কে কাজ দেওয়া হয়ছে, এমন না যে তার সাথের লোকজন তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিছে। আমরা শ্রমিকদেরকে নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিয়ে করে কাজ করতে বলেছিলাম।' তবে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের কোনো ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টনীর ব্যবস্থা করেনি। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় তারা কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মঃ আবদুল লতিফ বলেন, আমরা সার্বক্ষনিক তাদেরকে তদারকি করতে পারি না। কাজের শুরুতেই তাদের সাথে শর্ত ছিল শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এখন তারা কেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নি সেটার জন্য তারা জবাবদিহি করতে হবে। এ বিষয়ে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়াকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি এখনো ইনফর্মড হইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ার দফতর এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, 'দুর্ঘটনার পর আহত অবস্থায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সবসময় বলে এসেছি। এ ঘটনার সব দায়ভার তাদেরকে নিতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে তাদের সাথে কথা বলেছি।' প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনের চারতলা থেকে পড়ে একজন শ্রমিক গুরুতর আহত হন। এবং ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তিনতলা থেকে পড়ে একজন শ্রমিক মারা যান। এছাড়াও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীর ২৫ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সম্প্রসারিত অংশের কাজ করতে গিয়ে আরেক শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: