ফের বাড়ছে বাঁকখালী নদীর পানি

প্রকাশিত: ০২ আগষ্ট ২০২১, ০৩:৫৯ এএম
একদিনের ভারী বর্ষণে আবারো বাঁকখালী ও মাতামুহুরি নদীর পানি বাড়তে শুরু করায় কক্সবাজারে ফের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হবে বলে আশঙ্কা করেছেন কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড। জেলার বিভিন্ন নদী-খালে পানি বৃদ্ধি অব্যহাত থাকায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় ফসলের ক্ষতিসহ দুর্ভোগের আশঙ্কায় চিন্তিত বাঁকখালী ও মাতামুহুরি নদীর নিম্নাঞ্চলসহ বন্যা কবলিত এলাকার মানুষরা। সেই সঙ্গে বিস্তৃত হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। ফলে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বাঁকখালী নদীবেষ্টিত সদরের পূর্ব মুক্তারকুল, পশ্চিম মুক্তারকুল, চান্দেরপাড়া, মুহুরীপাড়া, বাংলাবাজার, চেয়ারম্যান পাড়া, খরুলিয়া ও রামু উপজেলার চাকমারকুল, রাজারকুল, ফঁতেখারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, কাউয়ারখোপ, গর্জনিয়াসহ নদবেষ্টিত বিভিন্ন ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ঈদগাঁও, চকরিয়া পেকুয়া, উখিয়া টেকনাফসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। সদরের ঝিলংজা ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সুলতান জানান, প্রতি বছর বন্যায় ঝিলংজা ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতি হয়। দু'দিন আগেও বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আজকে আবারও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নতুন করে নদীতে পানি বাড়ায় পশ্চিম মুক্তারকুল এলকায় নদীর পাড়ের সি সি ব্লক সরে যাচ্ছে। আমি স্থানীয়দের সাথে নিয়ে প্রাথমিকভাবে বালির বস্তা দিয়ে কোন রকম ঠেকানোর চেষ্টা করেছি। ঝিলংজা ইউনিয়নের পূর্ব মুক্তারকুল গ্রামের ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদ আমিনুল হক আমিন জানান, বৃষ্টি ও বাঁকখালী নদীর পানির চাপে নদী বেষ্টিত নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। রামু উপজেলার গর্জনিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী সরওয়ার আলম জানান, যেভাবে বাঁকখালী নদীর পানি বৃদ্ধি হচ্ছে তাতে আগামী ১ দিনের মধ্যে বন্যা দেখা দিয়ে উঁচু এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করবে। ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের সিকলঘাট গ্রামের শহিদুল্লাহ বলেন, রামু উপজেলায় বাঁকখালী নদীর পানির বৃদ্ধির ফলে বন্যার পানি বাড়ছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। বন্যার পানি কমতে থাকলেও শনিবার দিবাগত রাত থেকে হঠাৎ করে গত ২৪ ঘণ্টায় মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় বাঁকখালীসহ বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে ০.পয়েন্ট ৫ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা কবলিত এলাকায় ফের বন্যা দেখা দেয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়ছেন বাঁকখালী ও মাতামুহুরি অববাহিকার মানুষরা। আবারো বন্যার পানি বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি, রোগ বালাই বৃদ্ধি পাওয়া, বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট ও কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির আশা ব্যক্ত করে বলেন, গতকাল রাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় বাঁকখালী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যদি রাতে বৃষ্টি না হয় নদীর পানি কমতে শুরু করবে। এতে বন্যার পানিও কমে যাবে বলে মনে করছি। তিনি আরোও বলেন, মাতামুহুরি নদীর পানি ইতোমধ্যে হ্রাস পাওয়া শুরু করেছে। এর ফলে আগামী ১-২ দিনের মধ্যে মধ্যাঞ্চলের উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছি। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল। তিনি বলেন, বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। ক্ষত্রিগ্রস্ত মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট মেরামতেরও। তিনি আরোও বলেন, তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: