কক্সবাজারে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসতি উচ্ছেদ অভিযান শুরু

প্রকাশিত: ০২ আগষ্ট ২০২১, ০৫:৩০ এএম
পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধভাবে বসবাসরতদের উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। রবিবার (১ আগষ্ট) বিকাল থেকে এ অভিযান শুরু করেন জেলা প্রশাসনের ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর বৃষ্টির আগে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদে অভিযান চালায় প্রশাসন। এরপর বাকি দশ মাস আড়ালে চলে যায় তাদের কার্যক্রম। পাহাড় ধসকে নির্মম নিয়তিনির্ভর ঘটনা মনে করে প্রশাসনের নিরবতা নির্লিপ্ততায় রূপ নিয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে টিমগুলো কাজ শুরু করেছেন। প্রথম দিনে প্রায় ১ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে এনেছেন জেলা প্রশাসন। এ সময় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে বসবাসকারীদের সকল ধরণের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। ইতোমধ্যে পাহাড়ের বসতি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা পাহাড়ে বসবাস করছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। সচেতন মহলের অভিযোগ, প্রশাসনের উদাসীনতা, রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের লেজুড়বৃত্তি, তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন না করাসহ সমন্বিত উদ্যোগ না থাকায় পাহড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস রোধ করা যাচ্ছে না। তাদের নির্লিপ্ততার কারণে ছিন্নমূল, বানেভাসা, নদীভাঙা, জলবায়ু তাড়িত, ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষগুলো নগরীতে এসে কম টাকায় থাকতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকিতে পড়ছেন। যে কারণে প্রতিবছর বর্ষায় কক্সবাজারে কোনও না কোনও এলাকায় পাহাড় ধসে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এর পেছনে সচেতন মহল সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা পাহাড়গুলোর মালিক জেলা প্রশাসন। ওইসব পাহাড়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব তাদের। আর এসব এলাকায় ঘর, বাড়ি ও বস্তি নির্মাণের বিষয়ে আপত্তি ও অনাপত্তি বিষয়টি দেখার দায়িত্ব গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু এই তিন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কখনও পাহাড়গুলোর খোঁজ খবর রাখেনি। তাদের উদাসীনতার সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু মহল পাহাড় দখল করে সেখানে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে খেটে খাওয়া মানুষের কাছে ভাড়া দিচ্ছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। এ সময় পাহাড়ের পাদদেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের জীবন রক্ষায় সাইক্লোন শেল্টার অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাসা বাড়িতে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন জেলা প্রশাসক। অন্যথায় প্রশাসনের টিম গিয়ে ঘরগুলো সিলগালা করে দেবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিন আল পারভেজ বলেন, খানিকটা বিরতি দিয়ে গত শনিবার রাত থেকে আবারও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টিপাত আরও কয়েক দিন চলতে পারে। এই মুহুর্তে কক্সবাজার শহরসহ জেলার বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে থাকা মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। যাদের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই তারা নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণদের সরিয়ে নিতে কাজ চলছে। এসব টিমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মচারি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: