পর্যটকদের মুগ্ধ করছে রাঙ্গামাটির ‘বড়াদম’

প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৫৫ পিএম
সরু আঁকা-বাঁকা সড়কের দু’পাশে প্রকৃতিকে জড়িয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে উঁচু-নিচু পাহাড়। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে যেন ঘুমিয়ে থাকে শান্ত জলের হ্রদ। পাহাড়গুলোর সঙ্গে যেন নীল আকাশ আর হ্রদের গভীর মিতালী। যেখানে হ্রদ আর সবুজ পাহাড়ের মিতালী, সেখানে বইছে পর্যটক ও প্রকৃতি প্রেমিদের সুবাতাস। সড়কটির দু’পাশেই কাপ্তাই হ্রদ আর উঁচু-নিচু পাহাড়, যেন প্রকৃতির এক অদ্ভুদ মিলবন্ধন। যা প্রতিনিয়ত পর্যটকদের মুগ্ধ করছে। বলছি, রাঙ্গামাটি শহরের আসামবস্তি-কাপ্তাই সংযোগ সড়কের মগবান ইউনিয়নস্থ “বড়াদমের” কথা। কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষা ও পাহাড়ের সমারোহ এ সড়কটিকে নিয়ে গেছে এক অনন্য পর্যায়ে। মনে হবে,এটি দ্বিতীয় সিঙ্গাপুর। সবুজ প্রকৃতি আর সুবিশাল জলরাশির অপরূপ সৌন্দর্যমন্ডিত সড়কটি মুগ্ধ করে ভ্রমণ পিপাসু ও প্রকৃতি প্রেমিদের। মন চাইবে আঁকা-বাঁকা এ সরু সড়কে হারিয়ে যেতে। বিকেল শেষে সূর্য যখন পাহাড়ের মাঝখানে লুকিয়ে পড়ে তা অদ্ভুদ বিমোহিত করে ঘুরতে আসা পর্যটকদের। সড়কটির দু’পাশে রয়েছে উপজাতিদের ছোট ছোট দোকান। যেখানে মিলবে তাদের ঐতিহ্যবাহি খাবার আর তাদের উৎপাদিত ফলমূল। তিন থেকে চারটি ব্রীজ অতিক্রম করলে পৌঁছে যাবেন ‘বড়দাম’। দেখতে পাবেন স্বর্ণের রঙে মোড়ানো একটি বৌদ্ধ মন্দির। এছাড়াও কাপ্তাই হ্রদের পানির মধ্যে রয়েছে সুউচ্চ বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু বনভান্তের স্মৃতিস্তম্ভ। যেখানে সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের জন্মস্থান। এছাড়াও বড়াদম সড়কে দেখার মতো দু’টি পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। একটি বেড়ান্নে লেক শো ক্যাফেটেরিয়া অপরটি বড়গাঙ রিসোর্ট। বেড়ান্নে ক্যাফেটেরিয়ায় কফি পান করতে করতে উপভোগ করতে পারবেন কাপ্তাই হ্রদের শান্ত শীতল সৌর্ন্দয। সেখানে পাহাড়ীদের তৈরি অন্যান্য খাবারের ব্যবস্থাও আছে। আর ব্যাম্বু চিকেন, হ্রদের মাছসহ বিভিন্ন স্থানীয় খাবার যদি খেতে চান তাহলে চলে আসতে পারেন ‘বড়গাঙ রিসোর্টে। সেখানে রাত্রী যাপন করার ব্যবস্থাও রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ঘুরতে আসা মহসিন কবির জানান, তিনি আগেও কয়েকবার রাঙ্গামাটিতে এসেছেন কিন্তু এই স্থান সর্ম্পকে কোন ধারণা না থাকায় আগে কখনো আসতে পারেননি। পরিচিত এক বন্ধুর সুবাধেয় এই প্রথম এখানে আসা। তিনি আরো বলেন, যদি আগে জানতাম এখানের পরিবেশটা এত মনোরম মুগ্ধকর তাহলে এখানেই সবার আগে আসতাম। নারায়গঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা সিয়াম জানান, রাঙ্গামাটিতে আতীয় থাকায় প্রায় আসা হয়। যতবারই রাঙ্গামাটি ঘুরতে যায়,একবার হলেই ঐ সড়কে ঘুরতে যেতে হয়। যারা রাঙ্গামাটি এসে এ সড়কে ভ্রমণ না করেই চলে যায় তাদের রাঙ্গামাটি ভ্রমণ বৃথা। পর্যটকদের একবার হলেও এখানে ঘুরতে আসা উচিত। বরিশাল থেকে ঘুরতে আসা আব্দুল্লাহ জানায়, রাঙ্গামাটির বিভিন্ন স্থান ঘুরলেও এখানের মতো আনন্দ এবং পরিবেশ আর কোথাও পায়নি। লেক, পাহাড়, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের জীবন যাপনের জীবন্ত দৃশ্য কি নেই এখানে। সবার একবার হলেও এখানে এসে প্রকৃতির লীলাভূমিকে প্রাণ খুলে উপভোগ করা দরকার বলে তিনি মনে করেন। মনে রাখবেন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের ক্ষতি হয় এমন কিছু করবেন না। যথাযথ স্থানে ময়লা ফেলুন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের অনুভতিতে আঘাত হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকুন। স্থানীয় মানুষদের সাথে শালীন আচরণ করুন। যেভাবে যাবেন-বাংলাদেশের যেকোনো জেলা থেকে প্রথমে চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড়ে নামবেন। এখান থেকে বাস বা সিএসজি করে রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদী বা তবলছড়ি নামে সিএনজি করে বড়াদম সড়কে যাওয়া যাবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: