সরিষাবাড়ীতে বিদ্যুৎএর ভয়াবহ লোডশেডিং, জনজীবন অতিষ্ঠ

প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৭:০২ পিএম
জামালপুরের সরিষাবাড়ী বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ (বিউবো) এবং পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের আওতাধীন এলাকায় ভয়াবহ লোডসেডিংএ প্রায় এক লাখ গ্রাহকের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রচন্ড গরমের সাথে তাল মিলিয়ে লোডসেডিংয়ের মাত্রাও বেড়েছে। গত কয়েক দিনের লোডসেডিংয়ের কারনে প্রায় দুই হাজার ফ্রিজ, টিভি, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, রাওডার, সেটআপ বক্স, ফ্যান, বাল্বসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়েছে বলে জানাগেছে। এতে করে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ (বিউবো) এর অধীন প্রায় ২৪ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। পিক আওয়ারে জাতীয় গ্রিড থেকে প্ররেয়াজনীয় ১১/১২ মেগাওয়াটের স্থলে সরবরাহ পাওয়ায় ৪ মেগাওয়াট। এ ছাড়াও এনগ্রীন সরিষাবাড়ী সোলার প্লান্ট লিমিটেডএর উৎপাদিত ২.৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হয়। অপরদিকে, সরিষাবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের আওতাধীন ৭০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের চাহিদা প্রায় ১৭ থেকে ১৬ মেগাওয়াট। এর স্থলে ৭/৮ মেগাওয়াট পিক আওয়ারে সরবরাহ পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে দিনে ও রাত্রিকালীন সময়ে বিদ্যুৎএর চাহিদানুযায়ী সরবরাহ না থাকায় ১০/১৫ দিন যাবৎ ঘন ঘন লোডশেডিংয় হচ্ছে। তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ বিদ্যুৎ গ্রাহকরা দিন-রাত ঘনঘন লোডসেডিংয়ের জ্বালায় কাহিল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সামগ্রী নষ্ট হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। এ ছাড়াও বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। মহামারী করোনাকালীন সময়ের ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক ধ্বস কাটাতে মানুষ যখন হিমসিম খাচ্ছে ঠিক তখনই এই বিদ্যুৎ বিপর্যয়। এলাকার শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী, জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীসহ মানুষরা বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে বলে জানাগেছে। শিমলা বাজার এলাকার গৃহীনি লাকী আকতার, আরামনগর বাজারের কলেজ শিক্ষক মরিয়ম বেগম বেবী, লোকোসেড এলাকার গৃহীনি ফারজানা হক রিপি, ইস্পাহানী এলাকার ব্যবসায়ী আঃ কাদেরসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, এ ভাবে প্রতিদিন ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারনে বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সকলকে প্রচন্ড তাবদাহে প্রচন্ড কষ্ট করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারনে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ এর এ অবস্থায় বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, সরিষাবাড়ী টাউন বনিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আঃ হাই, সরিষাবাড়ী বনিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা জিন্নাহ, ব্যবসায়ী শফিকুল আলম আজাদ বলেন, কয়েকদিন যাবৎ বিদ্যুতের অসহনীয় লোডসেডিং জনজীবন বিপর্যস্থ। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতাদের সংখ্যা কমেগেছে। লোকসানের কবলে আমরা। বিদ্যুৎ সমস্যার দ্রুত সমাধান চান বলে তারা জানান। সরিষাবাড়ী বিউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী আবু-বক্কর তালুকদার জানান, সরিষাবাড়ী বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ জনবল সংকটের মধ্যেও গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। পিক আওয়ারে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করা গেলেও গত কয়েকদিন যাবৎ রাত্রীকালীন জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার তুলনায় সরবরাহকৃত ২/৩ মেঘাওয়াট কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় রাত্রিকালীন গ্রাহকদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তিনি সীমিত সময়ের মধ্যেই বিদ্যুতের ঘাটতি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হবে বলেও আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সরিষাবাড়ী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুহা: শিফাজ উদ্দিন জানান, বিদ্যুৎ এর চাহিদার অর্ধেক সরবরাহ পাওয়ায় আমরা গ্রাহকদের নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে পারছিনা। এটি তাড়াতাড়ি উত্তোরন করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: