মৌলভীবাজারে ৩০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল বন্ধ

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:৩১ পিএম
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাওয়ায় সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। সকল প্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও মৌলভীবাজার জেলায় ৩০টি কিন্ডারগার্টেন (কে.জি.) স্কুলের খোলেনি দরজা। আর্থিক সংকটের কারণে এসব স্কুলের দরজা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ করোনা ভাইরাসের পূর্বে ভালো ভাবেই চলছিল সবকিছু। করোনা ভাইরাস অনেক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সবকিছু উলট পালট করে দিয়েছে। এতে করে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা-শিক্ষকতা ছেড়ে ঝুঁকেছেন বিভিন্ন পেশায়। বেশিরভাগ শিক্ষক টিউশনসহ ভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন মৌলভীবাজার জেলা শাখার তথ্যমতে, বন্ধের আগপর্যন্ত জেলায় মোট ৪১৪ টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল চালু ছিল। এসব প্রতিষ্ঠানে লক্ষাধিক কমলমতি শিক্ষার্থী লেখাপড়ার পাশাপাশি ৪ হাজার ৬৬৫ জন শিক্ষক ও ৫২৫ জন কর্মচারী কর্মরত ছিল। স্কুলগুলো করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে বন্ধ। ভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় বহু প্রতিষ্ঠানকে ভবন ছাড়তে হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠান খোললেও অনেক প্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকটের কারণে এখন বন্ধের পথে। জেলায় অন্তত ৩০টি প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি এহসান বিন মুজাহির। জেলার জুড়ী উপজেলার মাতৃছায়া শিশু শিক্ষা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন মোঃ ইয়াহিয়া। করোনার কারণে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন । তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনি এই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খুবই খারাপ লাগছে। এ সময় তিনি আরোও বলেন, গত কয়েকদিন থেকে স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি যে স্কুলে শিক্ষকতা করতাম, সেটি খোলেনি। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্কুলে যোগাযোগ করেছি চাকরির জন্য। কিন্তু কেউ আশ্বাস দিতে পারেননি।’ বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি এহসান বিন মুজাহির বলেন, প্রায় ১৮ মাস বন্ধ থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকটে পড়ে। শিক্ষার্থী না আসায় বেতন সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। এতে গড়ে ৫০ ভাগ শিক্ষক-কর্মচারী চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি আরোও বলেন, কেউ কেউ পেশা পরিবর্তন করে মাছ শিকার, রিকশা চালানো, দোকান দেওয়ার মতো পেশা বেচে নিতে বাধ্য হয়েছেন। কিছু শিক্ষক রয়েছেন, যারা বিভিন্ন এনজিওতে চাকরি করছেন। তবে বেশিরভাগই এখন বেকার। এ পর্যন্ত জেলার ৩০টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। আরও অনেক স্কুল অর্থাভাবে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও শিক্ষকরা হয় চলে গেছেন, নয়তো ছাটাই করতে হয়েছে। অবিলম্বে এসব বন্ধ হওয়া প্রতিষ্ঠান সহ সকল কিন্ডারগার্টেনকে আর্থিক প্রণোদনার আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: