১৪ জনের চুল কেটে দিয়েছেন শিক্ষক, একজনের আত্মহত্যার চেষ্টা

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৪:১৫ পিএম
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্রের পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগে কাচি দিয়ে এলোমেলোভাবে চুল কেটে দেওয়ায় নাজমুল হাসান তুহিন (২৫) নামে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার শাহ মখদুম ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে। তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নাজমুল হাসান তুহিন মাগুরা জেলার বাসিন্দা এবং রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান লায়ল ফেরদৌস হিমেল গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, নাজমুল হাসান তুহিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের অন্তত ১৩-১৪ জন শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে। রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ে ফাইনাল পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় বড় চুল রাখায় ছাত্রদের চুল কাচি দিয়ে কেটে দেন তিনি। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন একই বিভাগের সহকারী প্রক্টর রাজিব অধিকারি ও জান্নাতুল ফেরদৌস মুনি। চুল কেটে দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনেরও চেষ্টা করেন। তবে পরীক্ষায় ফেল করার ভয় দেখিয়ে তাদের আন্দোলন থেকে বিরত রাখা হয়। বিষয়গুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। লাঞ্ছিত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কয়েকদিন আগে ক্লাস চলাকালে ওই শিক্ষক চুল বড় রাখার বিষয়ে ছাত্রদের বকাঝকা করেন। রোববার পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় আগে থেকেই দরজার সামনে ওই শিক্ষক কাচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা গেছে, তাদের মাথার সামনের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাচি দিয়ে কেটে দিয়েছেন। তারা আরও জানায়, সবার সামনে এভাবে তাদের লাঞ্ছিত করার পর ওই শিক্ষক জোর করে তাদের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছেন। কাচি দিয়ে এলোমেলোভাবে চুল কাটায় শিক্ষার্থীদের অনেকেই ন্যাড়া হয়েছেন। এসব বিষয় অস্বীকার করে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বলেন, কয়েকদিন আগে কিছু ছাত্র আমার কাছে এসে পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলেছিল। আমি এতে রাজি হইনি। হয়তো বা সেই রাগে এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য বিভাগের ছাত্ররা মিথ্যা গুজব ছড়াতে ফেসবুকে এ সব দিয়েছে। আমার বিভাগের কোন ছাত্র দেয়নি। এটা একটা গুজব। ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এই প্রথম শুনলাম। ভুক্তভোগিরা এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার সোহরাব হোসেন বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে কেউ লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ গ্রহণের জন্য সরকারি কর্মকর্তা নিযুক্ত রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগের খবর পাইনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: