পাহাড়ে লাঠি ও গায়ের জোর থাকলেই জায়গার মালিক

প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর ২০২১, ১২:০২ এএম
আব্দুল মোনাফ (৬২)। লামা উপজেলা ফাইতং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের কলারঝিরি পাড়ার একজন স্থায়ী বাসিন্দা। পাহাড়ের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ায় গত ২০০২ সালে পার্শ্ববর্তী ফরিদুল ইসলাম ও বুলু মোহন দে নামে জনৈক দুই ব্যক্তি থেকে ৩ একর করে ৬ একর জায়গার ক্রয় সূত্রে মালিক হন। সে ফাইতং ইউনিয়নের কলারঝিরি পাড়ার মৃত আবুল কাসেমের ছেলে। আব্দুল মোনাফ জানান, ক্রয়ের পর থেকে উক্ত জায়গায় ফলদ, বনজ বাগান ও ধান-সবজি চাষাবাদ করে গত ১৯ বছর ধরে ভোগদখলে আছেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত ১ বছর থেকে উক্ত জায়গার উপর লোলুপদৃষ্টি পড়ে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের খরাতি পাড়ার বাসিন্দা নুরুল হুদার। সে অন্য জায়গার একটি আর হোল্ডিং কাগজ চৌহদ্দি পরিবর্তন করে এই জায়গার উপরে ফেলে তার দাবী করছে। অথচ উক্ত জায়গাটি জি হোল্ডিং মূলে ফরিদুল ইসলাম ১৯৭৮-৭৯ ও বুলু মোহন দে ১৯৭৭-৭৮ সালে বন্ধোবস্তি পেয়ে ভোগদখলে ছিল। তাদের কাছ থেকে আমি ক্রয় করে ভোগদখলে আছি। এই জায়গায় কয়েকবার বনজ গাছ লাগিয়ে তা আমি বিক্রি করেছি। এখানে আমার বিভিন্ন প্রকার বনজ গাছ, লেবু বাগান, বাঁশ বাগান, ফলদ বাগান আছে। তিনি আরো বলেন, গত রোববার (৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টায় নুরুল হুদার ছেলে মোঃ সাজ্জাদ (২৭) এর নেতৃত্বে মোঃ শুক্কুর, মোঃ হাসান সহ ১৫/২০ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে আমার বাগান বাড়িতে হামলা চালায়। বাগানবাড়িতে আমার ছেলে আব্দুস সত্তার ও তার স্ত্রী উম্মে সালমা ছিল। সন্ত্রাসীরা ঘরের টিনের বেঁড়া কেটে ঘরে প্রবেশ করে আমার ছেলে ও ছেলের বউকে হাত পা বেঁধে বাঁশ বাগানে ফেলে রাখে। পরে আমার বাগানবাড়িটি ভেঙ্গে পাশে খালে ফেলে দেয়। তারা ২ ঘন্টা ধরে তান্ডব চালায়। এছাড়া গত আগস্ট মাসে একই সন্ত্রাসীরা আমার এই জায়গার আরেকটি বাগানঘর ভেঙ্গে ফেলে। আমি বান্দরবান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে মামলা করেছি। তারপরেও তাদের হামলা হুমকি ধমকি বন্ধ হচ্ছেনা। আমি আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছি। নুরুল হুদার এক ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। সেই ক্ষমতায় সে এইসব করছে। আব্দুল মোনাফ এর ছেলে আব্দুস সত্তার (২৮) বলেন, নুরুল হুদার ছেলে সাজ্জাদ এর নেতৃত্বে রাত ২টায় ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী আমাদের বাগানবাড়ি ঘিরে ফেলে। তাদের হাতে লম্বা দা, লাঠি ও অস্ত্র ছিল। আমরা সামান্য বাধা দিলেও তারা আমাকে ও আমার স্ত্রী উম্মে সালমাকে মেরে ফেলতো। আমাদের হাত-পা বেঁধে বাঁশ বাগানে ফেলে রাখে। উম্মে সালমা বলেন, আমি দুই হাত জোর করে তাদের কাছে আমার স্বামীর জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। এই বিষয়ে নুরুল হুদা ও তার ছেলে সাজ্জাদকে একাধিকবার ফোন করলেও তারা মোবাইল রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সালাম (৬২) বলেন, এই জায়গা আব্দুল মোনাফের। নুরুল হুদা জোর করে এই জায়গা দখল করতে চায়। সে জুলুম করছে। ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার ফাতেমা বেগম বলেন, নুরুল হুদা যা করছে তা অন্যায়। এখন “পাহাড়ে লাঠি ও গায়ের জোর থাকলে সবাই জায়গার মালিক !” এই বিষয়ে লামা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আলমগীর বলেন, ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে আমরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, নিষেধ করা সত্তে¡ও নুরুল হুদা কথা শুনেনি। তার ছেলে গুলো উচ্ছৃঙ্খল।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: