ব্রিটেনে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্মারক বাংলাদেশ সেন্ট্রারের পুন:উদ্বোধন

প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪:০৬ পিএম
নাজমুল হোসেন, যুক্তরাজ্য থেকে: বাংলাদেশের বিজয় দিবসের ৫০তম বর্ষ পূর্তি উদযাপনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্মারক বাংলাদেশ সেন্ট্রারের পুন:উদ্বোধন করা হয়েছে। গত ১৯ ডিসেম্বর রোববার যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও সেন্টারের চেয়ারম্যান সাঈদ আহমেদ চৌধুরী মুনা ফিতা কেটে দৃষ্টিনন্দন চারতলা এ ভবনের পুন:উদ্বোধন করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনন্য অবদানের স্মৃতিবিজড়িত বাংলাদেশ সেন্টারের সদস্য ছাড়াও বাংলাদেশি কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে মুখোরিত ছিলো এ জমজমাট আয়োজন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এ সেন্টারের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে। তখন যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে বৈশ্বিক সমন্বয়কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন ‘বাংলাদেশ সেন্টার’। সেন্ট্রাল লন্ডনের দ্য রয়্যাল লন্ডন বারা অব কেনজিংটন অ্যান্ড চেলসি এলাকার নটিংহিল গেইট টিউব স্টেশনের কাছেই অবস্থিতএই সেন্টারেই ভারতের পর বহিঃবিশ্বে বাংলাদেশের প্রথম কোনো দূতাবাস চালু হয়। বাংলাদেশ সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেনের পরিচালনায় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্যদিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও পুনঃউদ্বোধনের মূল আয়োজন। অনুষ্ঠানে সেন্টারের প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনার সাথে যুক্ত সকলকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। সকলে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়া মুক্তিযোদ্ধা ও দেশে-বিদেশে অবদান রাখা সকলের প্রতি। শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ ও সেন্টারের প্রয়াত সকল পর্যায়ের সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। সভার শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেন সেন্টারের প্রধান নির্বাহী এস এম মুস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পীকার আহবাব হোসেন, স্থানীয় কাউন্সিলর ডোরি স্কেমেটারলিং, শতবর্ষী ব্যক্তিত্ব দবিরুল ইসলাম চৌধুরী ওবিই, দ্য রয়্যাল বারা অব উইনসরের কাউন্সিলার সামসুল ইসলাম সেলিম, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুবায়ের, বাংলাদেশ সেন্টারের প্রধান উপদেষ্টা নবাব উদ্দিন ছাড়াও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবৃন্দ। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সেন্টারে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশিদের জন্য নানা সেবা চালু ছিলো। যেমন, বাংলা শিক্ষা ও বাংলা সংস্কৃতি চর্চা, অনুবাদ সেবা, অভিবাসন, বেনিফিট, পুলিশ ও আইনী বিষয়ে সহায়তা। আবার বাংলাদেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীরা নামমাত্র খরচ দিয়ে আপতকালীন এই সেন্টারে অবস্থানের সুযোগ পেতেন। এ সেন্টারে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা করে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের গৌরবের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে জানান বর্তমান কমিটির কয়েকজন সদস্য। সেন্টারটি জেকফ্রুট লন্ডন লিমিটেড কোম্পানি সংস্কারের উদ্যোগ নেন। চুক্তি অনুযয়ী সংস্কারের পুরো খরচ বহন করবে ওই কোম্পানি। বিনিময়ে তারা ১৪ বছরের সেন্টারের ওপরের তিনটি ফ্লোর লিজ হিসেবে ব্যবহার করবে। তবে সেন্টারকে নির্ধারিত হারে মাসিক ভাড়াও প্রদান করবে। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন সেন্টারের সংস্কারের অভাবে এক সময় ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। তাই স্থানীয় কাউন্সিল এটি নিজেদের দখলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলো। কিন্তু বিশাল অর্থের সংস্থান, কাউন্সিলের সঙ্গে মামলা মোকাবেলা এবং সংস্কারকাজ করে চোখ ধাঁধালো স্ব-গৌরবে ফিরলো।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: