দেশেই যুদ্ধবিমান তৈরির প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:০৮ পিএম
বাংলাদেশেই যুদ্ধবিমান তৈরির প্রত্যাশা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের একটা আকাঙ্ক্ষা আছে, বাংলাদেশেই যুদ্ধবিমান তৈরি করতে চাই। কাজেই এর ওপর গবেষণা করা এবং আমাদের আকাশসীমা আমরা নিজেরাও যেন রক্ষা করতে পারি সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর শীতকালীন রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ-২০২১ এর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রত্যাশার কথা জানান। যশোরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। এসময় তিনি কমিশন প্রাপ্ত বিমান বাহিনীর নতুন সদস্যদের অভিনন্দন জানান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিমানবাহিনী প্রধানসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও বিমানবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। বিমানবাহিনীর প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যরা আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনছে সম্মান ও মর্যাদা, যা বহিঃর্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। এই সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে আপনারা একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবেন- এটাই আমার প্রত্যাশা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটা গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় বিমানবাহিনী। পাকিস্তানের অসংখ্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে তারা। সীমিত শক্তি নিয়েও তারা যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে, জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে। জাতীয় পতাকা পাওয়া বিমানবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা গৌরব ও সম্মানের। এ পতাকার মান রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। আমি মনে করি, আপনারা এই মর্যাদা রক্ষা ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকবেন। তিনি বলেন, বিশ্বায়নের যুগে যে কোনো দেশের জন্য পেশাদার বিমানবাহিনী অপরিহার্য। আধুনিক ও যুগোপযোগী বাহিনী গড়তে আমরা ফোর্সেস গোল বাস্তবায়নে কাজ করছি। তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় পতাকা লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত। পতাকা হলো জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। তাই পতাকার মান রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর সব সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যে কোনো ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান ও গৌরবের বিষয়। ১১ স্কোয়াড্রন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিমানবাহিনীর ক্যাডেটদের মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সুচারুভাবে সম্পন্ন করে আসছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর সামরিক বৈমানিকদেরও এই স্কোয়াড্রন সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। সরকারপ্রধান বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা স্বপ্ন দেখেছেন, সব দিক থেকে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হবে। সেই স্বপ্ন থেকেই সীমিত সম্পদ দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। বিশেষ করে আধুনিক বিমান গড়ে তুলেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা নীতিমালা-১৯৭৪ করে দিয়ে যান। সে আলোকে আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তুলছি। দেশের প্রতিরক্ষা খাত আধুনিকায়ন ও কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছি। লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ নানা কাজ করে যাচ্ছি। আজ বাংলাদেশ বিমানবাহিনী দেশ ও বিদেশে সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ২১ স্কোয়াড্রন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সম্মুখসারির নিবেদিত আক্রমণাত্মক স্কোয়াড্রন। এই স্কোয়াড্রন এফটি-৬ এবং এ-৫ যুদ্ধবিমান পরিচালনার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীকালে ২০১৫ সালে এই স্কোয়াড্রনে সংযুক্ত হয় চতুর্থ প্রজন্মের ইয়াক-১৩০ কম্ব্যাট ট্রেইনার বিমান, যা ২১ স্কোয়াড্রনকে আকাশসীমা প্রতিরক্ষার দায়িত্বে আরও শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য করে তোলে। বর্তমানে এই স্কোয়াড্রন আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলের সর্বোচ্চ শেষ সীমানায় পর্যবেক্ষণ মিশন পরিচালনা করে যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: