কালীগঞ্জে প্রতারিত হচ্ছেন সোনার গহনা তৈরি করতে আসা সাধারণ মানুষ 

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২২, ০৭:৩১ পিএম

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে শনিবার (২৩ জুলাই) ছুটিরদিন সকাল সাড়ে ১০টায় খুলনা থেকে বিএসটিআই পরিদর্শক মেট্রালজি আলমাস মিয়া কালীগঞ্জে আসেন বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির কালীগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক সম্ভু কর্মকারের বধু  জুয়েলার্স নামে দোকানে নিক্তি (সোনা পরিমাপ করা যন্ত্র) চেক করতে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দোকানে যাবেন এবং নিক্তি চেক করে তাতে বিএসটিআইয়ের টিকিট মারবেন।

কিন্তু তিনি তা না করে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির কালীগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক সম্ভু কর্মকারের বধু জুয়েলার্স নামের দোকানে বসেই তিনি সকল জুয়েলারির দোকানের টিকিট লিখছিলেন। শনিবার ২৩ জুলাই হলেও তিনি বিএসটিআইয়ের প্রায় শতাধিক টিকিটে ২৪ জুলাই তারিখ লিখছিলেন। এমন সময় সেখানে স্থানীয় কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী উপস্থিত হলে তারা বিষয়টি নিয়ে বিএসটিআই পরিদর্শকের সাথে কথা বলেন। পরিদর্শক আলসাম মিয়া ভুল করে লেখা হয়েছে বলে জানান এবং পরে আর একদিন আসবো বলে সেখান থেকে চলে যান। এদিকে বিএসটিআই টিকিটের সরকারি মূল্য ১শ ১৫টাকা হলেও প্রতি জুলারির দোকান থেকে নেওয়া হয় ৫শ টাকা করে।

একাধিক জুয়েলারি দোকান মালিক জানান, ৫শ টাকার মধ্যে ৩শ ৮০ টাকা দেওয়া হয় নিক্তি চেক বাবদ আর বাকি ১শ ২০ টাকা করে উপজেলা প্রসাশনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন দিবস পালন করার জন্য। প্রায় ২শ দোকান থেকে ১শ ১৫ টাকা করে সরকারি টাকা নেওয়া হলে মোট টাকা দাড়ায় ২৩ হাজার টাকা সেখানে তাদের দিতে হয় মোট ৭৬ হাজার টাকা। ২৩ হাজার সরকারি টাকা বাদ দিলে বাকি ৫৩ হাজার টাকা যায় কার পকেটে? এমন প্রশ্ন বিভিন্ন জুয়েলারি মালিকের।

নিক্তি চেক না করে একটি দোকানে বিএসটিআইয়ের টিকিট দিয়ে চলেযান বিএসটিআই পরিদর্শক সেখান থেকে সব দোকানে পৌঁছে দেওয়া হয় টিকিট গুলো।
কোনো জুয়েলার্সের দোকানে নিক্তিতে হেরফের থাকলেও তারা থেকে যান ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এতে করে প্রতারণার শিকার হন সোনার গহনা তৈরি করতে আসা সাধারণ মানুষ।

একাধিক জুয়েলারি মালিক জানান, প্রতিবছর নিক্তি চেক করাতে আসা বিএসটিআইয়ের পরিদর্শক মোবাকরগঞ্জ সুগার মিলের গেস্ট হাউজে আসতো সেখানে বসেই তারা টাকা নিয়ে টিকিট দিয়ে চলে যেতো কোনো নিক্তি চেক করতোনা।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির কালীগঞ্জ শাখার সভাপতি ওসমান আলী জানান, আমরা সকল সদস্যের কাছ থেকে ৫শ টাকা করে নিয়ে থাকি নিক্তি চেকসহ বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে এটা আমরা খরচ করি। উপজেলায় ইলিশ মাছ খাবার সময় পহেলা বৈশাখেও আমাদের টাকা দিতে হয়।  খুলবা বিএসটিআই উপপরিচালক মেট্রালজি মোন্নাফ হোসেন জানান, প্রতিটি নিক্তি চেক করে তবেই তার গায়ে বিএসটিআইয়ের টিকিট লাগাতে হবে। তিনি যদি এক জনের কাছে টিকিট দিয়ে আসার চেষ্টা করেন তাহলে অপরাধ করেছেন। আমি ছুটিতে আছি ছুটি শেষ হলে বিষয়টি দেখবো। এই বিষয়ে বক্তব্য নেবার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিনের কাছে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: