ঢাকা শহরের কেউ কারো বিপদে এগিয়ে আসে না: পারিশা

ছবি: সংগৃহীত
নিজের মোবাইল খুইয়ে দুই ছিনতাইকারীকে ধরে প্রশংসায় ভাসছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী পারিশা আক্তার। তবে তার আক্ষেপ ও ক্ষোভ পুলিশের ওপর। পারিশা বলছেন, নিজে সাহস করে দুই ছিনতাইকারীকে ধরে দেওয়ার পরও পুলিশ এখনো তার ফোনটি উদ্ধার করতে পারছে না। এটা পুলিশের ব্যর্থতা। তার একটাই দাবি, অতিদ্রুত এই ছিনতাইকারীদের পুরো চক্রকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় যেন আনা হয়। এভাবে কারো ফোন যেন আর হারাতে না হয়।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ানবাজার এলাকার ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ওই ছাত্রীর সাহসিকতায় বাহবা দিচ্ছেন সবাই। পারিশা দীর্ঘ এক বছর ধরে হাতি নিয়ে থিসিস করছেন জবিতে। এই থিসিস পেপার জমা দিতে হবে চলতি মাসের ২৫ থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যেই।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার থিসিস করতে গিয়ে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে বাসে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার সময় বিকাল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর কারওয়ানবাজার ট্রাফিক সিগনালে বাসে বসে থাকা অবস্থায় পারিশা আক্তারের ফোন টেনে নিয়ে দৌড় দেয় ছিনতাইকারী। তখন সঙ্গে সঙ্গে বাস থেকে নেমে ছিনতাইকারীর পিছু নেন পারিশ। ধরতে না পেরে হতাশ হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। প্রধান সড়কের পাশেই ইত্তেফাকের গলিতে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।
ঠিক তখনই আরেক ছিনতাইকারী অন্য মানুষের মোবাইল ছিনতাই করে পালানোর সময় তাকে ঝাঁপটিয়ে ধরেন পারিশা। ছিনতাইকারীর মোবাইল কললিস্ট থেকে তার সহযোগীকে ফোন করে কারওয়ানবাজার আসতে বলেন পারিশা। সহযোগী আসলে প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতায় তাকে ধরা হয়। ছিনতাই চক্রের দুই সদস্যকে ধরতে পারলেও পারিশা উদ্ধার করতে পারেননি নিজের মোবাইল ফোনটি। থিসিসের ডেটাসহ ফোনটি উদ্ধার না হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে জমা দেওয়ার ব্যাপারে শঙ্কায় পড়েছেন এই ছাত্রী।
পারিশা জানান, থিসিসের সব ডেটা ছিনতাই হওয়া ফোনটিতেই ছিল। তাছাড়া দুইদিন পরে আমার সাবমিশন ডেট। এগুলো আবার নতুন করে তৈরি করা কঠিন হবে। তাছাড়া আমার হাতে পর্যাপ্ত সময় নেই৷
পারিশা আরও বলেন, মানুষ মানুষের জন্য। একের বিপদে অন্যকে এগিয়ে আসতে হবে। মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত হওয়া দরকার।এই ঢাকা শহরের কেউ কারো বিপদে এগিয়ে আসতে চায় না। তবে এটা ঠিক না। সবার বিপদে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত।
ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থী দাবি তুলে বলেন, ছিনতাইকারীর সদস্যদের আটক করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এদের পেছনে বড় একটা সিন্ডিকেট কাজ করছে। এভাবেই প্রতিনিয়ত অনেক মানুষের ফোন ছিনতাই হচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করে না। চুপচাপ মন খারাপ করে চলে যায়। তবে আমি ছিনতাইকারীকে ধরার সাহস করেছি। যখন ছিনতাইকারী আমার ফোন টান দিয়ে দৌড় দেয় তখন অনেক চিৎকার করেছি। অনেকের সাহায্য চেয়েছি প্রথমে কেউ এগিয়ে আসেনি। আমার তৎপরতা দেখে পরে কয়েকজন আমার পাশে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে তেজগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহমুদ খান বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযান চলছে। এই পর্যন্ত সন্দেহভাজন আমরা ১০ থেকে ১২ জনকে আটক করেছি। এ ব্যাপার পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। অতিদ্রুত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে পুলিশ সক্ষম হবে বলে আশ্বস্ত করেন এই কর্মকর্তা।
ইমদাদ/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: