বন্যায় ক্ষতি ৮৬ হাজার ৮১১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

সারাদেশে বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। আজ সোমবার (২৫ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সাম্প্রতিক বন্যা, ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ক পর্যালোচনা ও করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত আন্ত:মন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি'র সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দেশে এই বছরে এখন পর্যন্ত আনুমানিক ৮৬ হাজার ৮১১ কোটি ৬৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭২ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে বন্যায় এ বছরে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের আনুমানিক আর্থিক দাম ১২৫৮ কোটি ৫৩ লাখ ৯১ হাজার ১১২ টাকা এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের আনুমানিক আর্থিক দাম ৫৫৯৫৭ কোটি ২১ লাখ ২০ হাজার ৫০৮ টাকা। তিনি জানান, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৬৪ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ৪৩ টাকা এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ১৩৫৫ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৫৫ টাকা। তিনি জানান, ব্রিজ ও কালভার্ট সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২৯টি আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক হাজার ৪৯৬টি। এছাড়া ৬৬৪ কিলোমিটার পাকা সড়ক এবারের বন্যায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক হাজার ৮৮৬ কিলোমিটার সড়ক। ইট খোয়া দিয়ে নির্মিত ৩১৫ কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণ আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৭৬ কিলোমিটার সড়ক। এছাড়া কাঁচা সড়ক সম্পূর্ণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭২১ কিলোমিটার আর আংশিক হয়েছে ছয় হাজার ৮৫ কিলোমিটার।

দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে এই বছরে গত কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, ভারতের মেঘালয়, আসাম, ত্রিপুরায় ভারি বৃষ্টি হয়েছে। কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে ১৩ মে থেকে পূর্বাঞ্চলের সিলেটের সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে এবং সিলেট, সুনামগঞ্জ ও আশেপাশ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পর্যায়ক্রমে এই বন্যা দেশের ১৮টি জেলায় বিস্তৃতি লাভ করে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে মানবিক সহায়তা দেওয়া জন্য ইতিমধ্যে লক্ষ্যে ১ এপ্রিল থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত ৭ হাজার ২০ মেট্রিক টন চাল, ৯ কোটি ৪৪ লাখ নগদ টাকা, ১ লাখ ৪০ হাজার ১৩২ প্যাকেট শুকনো ও অন্যান্য খাবার, শিশু খাদ্য কেনার জন্য ৪০ লাখ টাকা, গো-খাদ্য কেনার জন্য ৪০ লাখ, গৃহ মঞ্জুরি বাবদ ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা, এবং ৮ হাজার ৭০০ বান্ডিল ঢেউটিন বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।