ছিনতাইকারীর ছবি তোলায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে পথচারীকে পেটানোর অভিযোগ

প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২২, ১০:৪৬ পিএম

টাঙ্গাইলের সখিপুরে ছিনতাইকারীর ছবি তোলায় পথচারীকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ ওঠেছে ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে। জানা যায় উপজেলার ২ নং বহেড়াতৈল ইউনিয়নের বহেড়াতৈল-ছাতিয়াচালা-কচুয়া সড়কের ছাতিয়াচালা এলাকায় সোমবার (২৫ জুলাই) বিকালে এক পথচারী শ্রমিকের মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয় মোটরসাইকেল আরোহী ৩ ছিনতাইকারি। পরে মোটরসাইকেল যুগে পালানোর সময় স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া করে এবং মোটরসাইকেলের তেল শেষ হওয়ার কারণে তাদের ধরে ফেলে স্থানীয়রা।

ছিনতাইকারীদের ধরে স্থানীয়রা ছাতিয়াচালা বাজারে বেঁধে রাখে। ওই রাস্তা ধরে পার্শ্ববর্তী গ্রামের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম ও তার ভাগ্নে মোটরসাইকেল যুগে বহেড়াতৈল যাওয়ার পথে লোকজনের ভিড় দেখে নেমে ঘটনাটি দেখে এবং ছিনতাইয়কারীদের ছবি মুঠোফোনের ধারণ করে। মুঠো ফোনে ছবি ধারণের অপরাধে ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলাউদ্দিন মিয়ার বিরুদ্ধে এলোপাতাড়ি মারধর করে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সাইফুল।

এ বিষয়ে আহত সাইফুল ইসলাম জানান, আমি আর আমার ভাগ্নে বহেড়াতৈল যাওয়ার সময় অনেক মানুষ দেখে ছাতিয়াচলা বাজারে দাঁড়াই এবং ঘটনা শুনে ছিনতাইকারীদের ছবি তুলতে গেলেই আলাউদ্দিন মেম্বার আমার উপর ক্ষিপ্ত হন। আমি তাকে ধারণকৃত ছবি কেটে দেওয়ার কথা বললেও তিনি কোন কথা না শুনে তিনি ও তার লোকজন আমাকে এলোপাথাড়ি ভাবে পিটিয়ে আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ওই গ্রামেই আমার এক বোনের বিয়ে হয়েছে, তিনি যদি আমাকে না বাঁচাতেন তাহলে হয়তো ওনারা আমাকে মেরেই ফেলতেন। আমাকে মারধরের সুষ্ঠু বিচার চাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, বহেড়াতৈল ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলাউদ্দিন মিয়ার ওই পথচারী ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে মারধর করার ঘটনাটি সত্য।

বহেড়াতৈল ইউপি'র ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলাউদ্দিন মিয়া এ বিষয়ে বলেন, আমি কাউকে মারি নাই। আমার এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে ওই ছেলেটার কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়, আমি ও ওই ছেলেটার চাচাতো বোন তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে আমি নিজেই বেশ কয়েকটি আঘাতের শিকার হয়েছি। আর ওই ছেলেটি সম্পর্কে আমার বিয়াই হয় কিন্তু চিনতাম না।

সখিপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রেজাউল করিম এ বিষয়ে বলেন, চুরির মামলা দিয়ে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে এবং স্থানীয় মেম্বারের সাথে কারো কোন হাতাহাতির ঘটনাটি তিনি অবগত নন। এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, সখিপুর পৌরসভার বাগান চলা ৩নং ওয়ার্ড এলাকার সোহরাব আলীর ছেলে মোতালেব (৩৫), ৫নং ওয়ার্ডের জামতলা এলাকার মীর মজনু মিয়ার ছেলে মীর বিল্লাল (২৬) ও বহেড়াতৈল নয়াপাড়া এলাকার মৃত কালু কোচের ছেলে উপেন কোচ (২৫) এ ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটায়।

ছিনতাইয়ের কবলে পড়া দিনমজুর জুয়েল জানায়, ছিনতাইকারীদের পুলিশ ধরে নেওয়ার পর টাকা ও মোবাইল ফোন ফেরত পেয়েছি। হতদরিদ্র জুয়েল কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলেন আমার কয়েকদিনের পরিশ্রম করে উপার্জিত জমানো টাকা ও মোবাইল ফোনটি ছিনতাই হওয়াতে আমি খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম। আমার রক্ত পানি করা উপার্জনের টাকা ও মোবাইল আমি ফেরত পেয়ে আমি খুব খুশি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: