রাবি ছাত্রলীগ নেতার নির্দেশে প্রক্সি দিতে আসে বায়জিদ!

প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০২২, ০৮:৫২ পিএম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালেয়ে (রাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের অন্যের হয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ২ ঢাবি শিক্ষার্থীসহ চার জন এবং একজন মূল পরীক্ষার্থী মোট পাঁচ জনকে আটক করে কারাগারে পাঠায় রাবির ভর্তি পরীক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকা ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রক্সিদাতা বায়জিদ খানকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। রাবির ছাত্রলীগ নেতার মুশফিক তাহমিদ তন্ময়ের নির্দেশে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়েছেন বলে স্বীকার করছেন বায়জিদ। তার স্বীকারোক্তির একটি ভিডিও গণমাধ্যমে হাতে পৌঁছে।

প্রক্সি দেওয়ার নির্দেশদাতা মুশফিক তাহমিদ তন্ময় মুশফিক তাহমিদ তন্ময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ্ মখদুম হলে থাকেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য, সিট বাণিজ্যসহ রাবি ও রুয়েট ক্যাম্পাসে ইয়াবা ও মাদক পাচারের সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ছাত্রলীগ নেতার কথায় প্রক্সিদাতা বায়জিদ খান রাবি ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় বায়জিদ জানান, একই বিভাগে ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ তন্ময় পড়াশোনা করেছেন। তন্ময়ের কথায় তিনি প্রক্সি দিতে সকালে ক্যাম্পাসে এসেছেন। প্রক্সি দেওয়ার পূর্বে তিনি তার ব্যক্তিগত ফোন তন্ময়ের কাছে জমা রেখেছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক তাহমিদ তন্ময়কে একাধিকবার ফোন করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সির সঙ্গে ‘সম্পৃক্ততা’ থাকায় মুশফিক তাহমিদ তন্ময়ের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, এ বিষয়টি আমরা শুনেছি। আমরা খুব দ্রুতই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলে এ ঘটনায় প্রমাণসাপেক্ষ তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মেহেদী হাসান তাপস বলেন, এই বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। তবে সে যদি সত্যিকার অর্থে এমনটা করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্তদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের একজন তন্ময় নামে একজনের কথা বলেছে। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনকে তদন্ত করতে অনুরোধ জানিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে তন্ময়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আইন সব সময় আইনের গতিতেই চলবে। ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের সাথে যে বা যারা জরিত, তাদের পরিচয় যতই শক্ত হোক না কেন, অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। বিশ্ববিদ্যালেয় প্রশাসন এবং গোয়ান্দা সংস্থা সর্বদা তৎপর রয়েছেন। আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত প্রমাণসাপেক্ষ অপরাধীদের।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: