অসামাজিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ট হয়ে মেয়েকে হত্যা করেন বাবা

প্রকাশিত: ০২ আগষ্ট ২০২২, ০৫:৩৬ পিএম

অনেক স্বপ্ন নিয়ে পুলিশের চাকুরি করে এমন এক ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন বাবা। কিন্তু মেয়ের চারিত্রিক কারণে সেই বিয়ে টিকেনি। এরপর এলাকায় এসে মাদকের ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে মেয়ে। এনিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়। একপর্যায়ে তাকে জোরপূর্বক কর্মের জন্য ঢাকার সাভারে পাঠানো হয়। সেখানে সে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করছিলেন। সর্বশেষ গত কোরবানির ঈদে ছুটিতে বাড়িতে আসলে মেয়ে গর্ভবতী বলে জানতে পায় বাবা রফিকুল ইসলাম।

এতে তিনি লোকলজ্জার ভয়ে মেয়ের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে গত ২২ জুলাই রাত ১ টার দিকে মেয়েকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় পা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর বাড়ির পাশের জমিতে পুতে রাখা হয় লাশ। কিন্তু কেউ যদি দেখে ফেলে এই ভয়ে দুইদিন পর লাশ তুলে দূরে নিয়ে গিয়ে পুতে রাখা হয়। এমনি একটি লোমহর্ষক ঘটনার ৭ দিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার(সি-সার্কেল) আশরাফুল আলম পলাশ। এর আগে গত ২৫ জুলাই দুপুরে পীরগাছা উপজেলার তালুক ঈশাদ নয়াটারি গ্রাম থেকে অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত ২৫ জুলাই সকালে নয়াটারি এলাকার একটি সমতল জমিতে বৈদ্যুতিক খুঁটি সংলগ্ন জাগায় উঁচু মাটির ঢিবি দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে মাটি খুঁড়ে অজ্ঞাত এক নারীর মাথা দেখতে পায় লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে মাটির নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সেদিনই লাশটি নিজের বোন লিপির বলে দাবি করে উপজেলার অনন্তরাম (বড়বাড়ি) এলাকার শামীম মিয়া। পুলিশ এ ঘটনায় মামলা দায়েরের জন্য তার বাবা রফিকুল ইসলামকে থানায় ডাকেন। কিন্তু তিনি মামলা দায়ের না করার জন্য গড়িমশি শুরু করেন। তবে একপর্যায়ে তিনি বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করলেও সন্দেহ বেড়ে যায় পুলিশের। পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে লিপির অবস্থান বাড়িতেই ছিল বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম ও ভাই শামীমসহ পরিবারের চার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এক পর্যায়ে মেয়েকে অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়ে নিজেই হত্যা করেন বলে স্বীকার করে রফিকুল ইসলাম। পীরগাছা থানার ওসি মাসুমুর রহমান বলেন, রফিফুল ইসলাম মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। ইতিমধ্যে রফিকুলকে সঙ্গে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের পর পুতে রাখতে ব্যবহৃত কোদালসহ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।

রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার(সি-সার্কেল) আশরাফুল আলম পলাশ বলেন, রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হলে তিনি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত রফিকুলকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: