নতুন রুপে ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী কাঁমাক্ষ্যা মাতার মন্দির

প্রকাশিত: ০২ আগষ্ট ২০২২, ০৬:৫৬ পিএম

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার মুজাখালী গ্রামে কালের বিবর্তনে নতুন রুপে হালুয়াঘাটের ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী কাঁমাক্ষ্যা মাতার মন্দির। জনশ্রোতি রয়েছে প্রায় শত বৎসর পূর্ব থেকে মাটির কুঁড়ের ঘরে প্রতি শনিবার শ্রী শ্রী কাঁমাক্ষ্যা মাতার পূজা-অর্চনা অনুষ্ঠিত হত এবং বৈশাখ মাসের শেষ শনিবার শ্রী শ্রী কাঁমাক্ষ্যা মাতার বাৎসরিক বড় পূজা আনন্দঘন পরিবেশে হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে পূজা অর্চনার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সকাল থেকে শুরু করে দিনব্যাপী চলে সনাতন ধর্মালম্বী ব্যক্তিদের এই মিলন মেলা। পূর্বে কুঁড়ের ঘর থাকলেও বর্তমানে বিভিন্ন সরকারী দান-অনুদানের মাধ্যমে ও ভক্তদের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে বিশাল কারুকার্য সমন্নিত পাকা মন্দির।

জানা যায়, হিমালয় অধিপতি গিরিরাজ দক্ষ এক বৃহৎ বৈদিক যজ্ঞের আয়োজন করেন। অনাহুত দক্ষ কন্যা সতী, পিতার যজ্ঞানুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তাকে র্ভৎসনা করেন। তখন তাকে শুনতে হয় শিব নিন্দা। পতি নিন্দা সইতে না পেরে সতী যজ্ঞানুষ্ঠানে আতহুতি দেন। স্ত্রীর আতহুতির ফলে ক্রুদ্ধ শিব দক্ষের যজ্ঞানুষ্ঠান ধ্বংস করে সতীর দেহ দাহ না করে কাঁদে নিয়ে প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। শিব নৃত্যের তান্ডবে পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়। দেবতারা ভয়ে প্রমাদ গুনতে শুরু করেন। তখন ভগবান বিষ্ণু সুর্দশন চক্র দিয়ে সতীর দেহ খন্ড খন্ড করে ভূতলে ফেলে দিলে ক্রুদ্ধ শিব শান্ত হয়। রক্ষা পায় ধারিত্রি, সতীর দেহাংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ভারত বর্ষের বিভিন্ন স্থানে।

গড়ে উঠে ৫১টি পীঠস্থান। সতীর জননেন্দ্রিয় পতিত হয় ভারতের আসামের কামরুপ জেলার নীলাচল পর্বতে। আর সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হয় কামরুপ কাঁমাক্ষ্যা মাতার মন্দির। কামরুপ কাঁমাক্ষ্যা মাতার মন্দিরের পূজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বলা হয় পান্ডা। জনশ্রুতি রয়েছে এমন কোন পান্ডা বা ভক্ত স্বপ্নদৃষ্ট হয়ে মেঘালয়ের সিমান্ত ঘেঁষা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার মুজাখালী গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীশ্রী কাঁমাক্ষ্যা মাতার মন্দির। প্রায় শত বৎসর পূর্ব থেকেই এইভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে শ্রীশ্রী কাঁমাক্ষ্যা মাতার পূজা। কালের বিবর্তনে আজ বিশাল অনুষ্ঠানের রুপ নিয়েছে।

পূজারী ভক্ত আকাশ সরকার বলেন,আমি বৈশাখ মাসের শেষ শনিবার শ্রী শ্রী কাঁমাক্ষ্যা মাতার বাৎসরিক বড় পূজায় পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে মন্দিরে আসি। এছাড়াও সময় পেলে প্রতি শনিবার মন্দিরে আসি। অপর এক পূজারী ভক্ত সিমা রানী বলেন,আমার একটা মানত ছিল তাই মন্দিরে আসা। শ্রী শ্রী কামাক্ষা মাতা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চন কুমার সরকার বিডি২৪লাইভকে বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি দান-অনুদান ও ভক্তদের সহযোগিতায় নিয়ে শ্রী শ্রী কামাক্ষা মাতা মন্দিরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছি। আমি মন্দির উন্নয়নের জন্য সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: