বিয়ে না করেই একসঙ্গে তিন বছর বসবাস, অতঃপর খুন

প্রকাশিত: ০৩ আগষ্ট ২০২২, ০৭:৫২ পিএম

সাভারের আশুলিয়ায় চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা চালক আলী নূর হত্যা মামলার মূল আসামী আহিনা খাতুন (২৯) কে নারায়নগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪ এর একটি দল। বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।

এরআগে মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাতে নারায়নগঞ্জ জেলার কাঁচপুর এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। আটক আহিনা খাতুন (২৯) নীলফামারির বাসিন্দা বলে জানা যায়। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিহত আলী নূর বিশ্বাস মাগুড়া জেলার শ্রীপুর থানার হোগলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।

আসামীর জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, প্রায় তিন বছর আগে নিহতের সাথে আসামীর পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে তারা দুজনই একসাথে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেয়। এমতাবস্থায় বিবাহ না করেই তারা নিজেদের পরিবারকে না জানিয়েই স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে আশুলিয়া এলাকায় বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে।

গত ৩ বছরে তারা ৫ বার বাসা পরিবর্তন করেছেন। জুলাই মাসের শুরুতে আলী নূর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করে। পরে গত ১৭ জুলাই আলী নূর ঢাকায় ফিরে আসে। তার বিয়ের কথা জানতে পেরে আসামীর মনে প্রচন্ড ক্রোধ এবং প্রতিহিৎসার সৃষ্টি হয়। পরে প্রতিহিৎসা ও ক্রোধে নূর বিশ্বাসকে হত্যার পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক আহিনা খাতুন ঘটনার দিন ভোররাতে ঘুমন্ত অবস্থায় বটি দিয়ে মাথা, গলা এবং বুকে নৃশংশভাবে কুপিয়ে হত্যা করে এবং লাশটি কাঁথা চাপা দিয়ে রাখে।

হত্যার পরে তার থালা-বাসন, কাপড় চোপর এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি একটি বস্তায় ভরে ঘড়ে তালা দিয়েনারায়নগঞ্জের কাঁচপুর এলাকায় পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে গত ৩১ জুলাই আলী নূরের মোবাইলের মাধ্যমে তার ভগ্নিপতি জাকিরকে অসুস্থতার কথা জানায়। এবং বলে তাকে বাঁচাতে তার পরিবার যেন দ্রুত আশুলিয়ার ভাড়া বাসায় আসেন সে কথা বলেন। ০১ আগস্ট নিহতের পরিবারের লোকজন জিরাবো এলাকায় দেলোয়ার বেপারীর ভাড়া দেওয়া টিনশেড বাসায় গিয়ে দেখতে পায় যে রুমের দরজা বাহির হতে তালাবদ্ধ।

তারা বাসার মালিক ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় জানালা খুললে রুমের ভিতর হতে তীব্র দুর্গন্ধসহ মেঝেতে কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় চিৎ হয়ে আলী নূরের লাশ দেখতে পায়। পরবর্তীতে আশুলিয়া থানা পুলিশ উক্ত ঘরের তালা ভেঙ্গে রুমের ভিতর থেকে লাশটি উদ্ধার করে।

র‌্যাব আরও জানায়, এ ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াসহ এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-৪ আসামী গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে নারায়নগঞ্জ জেলার কাঁচপুর এলাকা হতে আসামী আহিনা খাতুন (২৯)কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।

র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানান, গ্রেফতার আসামীকে থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: