শেরপুরে দেড় হাজার হেক্টর পতিত জমি চাষের আওতায় এসেছে

প্রকাশিত: ০৩ আগষ্ট ২০২২, ১০:১২ পিএম

শেরপুর জেলায় দুই বছরে চাষের আওতায় এসেছে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর আবাদ যোগ্য পতিত জমি। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে জেলায় মোট আবাদযোগ্য পতিত জমি ছিলো ৫ হাজার ৭৮০ হেক্টর। যা ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে কমে এসেছে ৪ হাজার ১৭১ হেক্টরে। বর্তমানে জেলায় মোট ফসলি জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ৮০ হেক্টরে। আবাদি জমির পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে শস্যের নিবিড়তা ও শস্য বহুমুখিতা। বর্তমানে শেরপুর জেলায় শস্যের নিবিড়তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। তাছাড়া উচ্চ মূল্যের শস্য আবাদের পরিামাণও দিন দিন বাড়ছে। এতে উৎপাদনশীলতা বাড়ার পাশাপাশি কৃষকের আয়ও বেড়েছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় শেরপুরের কৃষিতে এমন পরিবর্তন হয়েছে।

বুধবার (৩ আগস্ট) শেরপুর খামারবাড়ী মিলনায়তেন অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এমন তথ্য তুলে ধরা হয়। ওই প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রনীত কর্মপরিকল্পনা শেরপুর জেলায় বাস্তবায়ন কৌশল নির্ধারণে এ কর্মশালাটির আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আশরাফ উদ্দিন প্রধান অতিথি এবং প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন শেরপুর খামার বাড়ীর নব যোগদানকৃত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুকল্প দাস। এতে অন্যান্যের মাঝে জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) এমদাদুল হক, জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা রহিমা খাতুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা এবং কৃষকরা তাদের বক্তব্যে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন ও নতুন নতুন কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। কর্মশালায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ডিএইই কর্মকর্তা, বিএডিসি, বারি, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সীর কর্মকর্তা, সাংবাদিক, ইমামসহ অর্ধশতাধিক কৃষক-কৃষানী অংশ গ্রহণ করেন।

প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, কেবল শেরপুর জেলাই নয়, বৃহত্তর ময়মনসিংহের প্রকল্পভুক্ত ৬ জেলাতেই গত দুই বছরে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর আবাদ যোগ্য স্থায়ী ও মৌসুমী পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় এসেছে। শস্যের নিবিড়তা ২০৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এক ফসলি জমি দুই ফসলি, দুই ফসলি জমি তিন এমনকি চার ফসলি জমিতেও উন্নত হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের ও উচ্চ মুল্যের ফসলের আবাদ বেড়েছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছর থেকে ১২৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যায়ে প্রকল্পটি ২০২৫ সালে শেষ হবে।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে সরিষা, ভূট্টা, গ্রীষ্ম কালীণ টমেটো, আউশ ধান আবাদ বাড়ছে। এতে শস্যের নিবিড়তা বাড়ার সাথে সাথে ফসল বিন্যাসে উচ্চ মূল্যের ফসলের আবাদ বাড়ছে। এতে কৃষকরা লাববান হচ্ছেন এবং কৃষিতে প্রযুক্তি গ্রহণের সক্ষমতা বাড়ছে, ঘটছে নারী ও নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠির ক্ষমতায়ন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আশরাফউদ্দিন বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ‘জিরো হাঙ্গার’ বা ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দেশের এক ইঞ্চি জমিও যাতে পতিত না থাকে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের উৎপাদনের পরিমাণ দ্বিগুন করতে হবে। এজন্য উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প জীবন কালের ফসলের জাত চাষ করতে হবে। রোপা আমন ও বোরো আবাদের মাঝে সরিষা চাষ করে দুই ফসলী জমিকে তিন ফসলী জমিতে পরিণত করতে হবে।

শেরপুর খামার বাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুকল্প দাস বলেন, আমরা এখন উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। এজন্য আমাদের মন-মানসিকতাও বদলাতে হবে। কৃষিকে বানিজ্যিকভাবে নিতে হবে। নতুন নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: